মাওলানা আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আলেম,অসংখ্য আলেম উলামাদের উস্তাদ।শুধু বাংলাদেশই না, এই উপমহাদেশের একজন অন্যতম আলেমে দ্বীন তিনি। শাহ আহমদ শফি সাহেব ১৯২০ আবার কারো মতে ১৯২৪সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি পটিয়া জিরি মাদ্রাসা এবং হাটহাজারী মুইনুল ইসলাম মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেছেন, পরে তিনি ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দে কিছু বছর অধ্যয়ন করেন এবং সেখানে শায়খুল হিন্দ, ব্রিটিশবিরোধী ও উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা আওলাদে রাসূল, মাওলানা শায়খ হুসাইন আহমদ মাদানী(রহঃ) এর সংস্পর্শে আসেন। ১৯৪৮ এর পরে তিনি দেশে ফিরে হাটহাজারি মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী রহঃ এর মৃত্যুর কয়েকবছর পরে তিনি ঢাকার ফরিদাবাদ জামিয়া ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। পরে '৯০এর দশকে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক হন, তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক মুঈনুল ইসলাম। সেই সময়েই তিনি বাংলাদেশের কওমি ঘরানার অন্যতম আলেম হয়ে যান। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম মাসিক ইসলামী পত্রিকা মাসিক নেয়ামতের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি বাংলা ও উর্দুতে অনেক কিতাব বই লিখেছেন।
তিনি ২০০৮ সালে বেফাকের চেয়ারম্যান পদে আসেন। ২০১১সালে তিনি এবং জুনায়েদ বাবুনগরী গঠন করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আকিদায়ে খতমে নবুয়তের পক্ষে তার অবস্থান জোড়ালো ছিল। প্রকৃত সহীহ ইসলামের শত্রু কাদিয়ানী,খ্রিস্টান মিশনারী,ভন্ড-পীর,চরমপন্থী,কথিত হেজবুত তাওহিদ,নাস্তিক মুরতাদ এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন।২০১১সালের পরে তিনি আলোচিত হন। ২০১৩ সালের ৬এপ্রিল এবং ০৫মে তার ডাকে হেফাজতের ১৩দফার পক্ষে এবং নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলে তাওহীদি ও রাসূলপ্রেমিক মুসলিম জনতা লংমার্চ এবং বিশাল সমাবেশ হয়। পরবর্তীতে শাহ আহমদ শফী সাহেব এই হেফাজতে ইসলাম কে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেন।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন হেফাজতের আমির। রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি অনেক কথা বলেছেন। ২০১২,২০১৬ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এবং ২০১৭সালে যখন আরাকানের তথা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর যখন অন্যায়াভাবে গণহত্যা ও নির্যাতন শুরু হয় তখন এই আহমদ শফী সাহেব রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন এবং তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক মানবিক সহায়তা করেছেন। তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত আশেকে রাসূল, তাই তিনি প্রতিবছর চট্টগ্রামে "শানে রিসালাত সম্মেলন " এর আয়োজন করেছেন। কওমি মাদ্রাসা সমূহের সরকারি স্বীকৃতি আদায়ের পক্ষে ছিলেন এবং এতে বাংলাদেশ সরকার গত ২০১৮সালে কওমি মাদ্রাসাসমূহের সরকারি স্বীকৃতি দান করে।
শাহ আহমদ শফি তিনি অনেক আলোচিত ও সমালোচিত আলেম ছিলেন। গত ১৮সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে তিনি ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে মহান আল্লাহ তায়ালার ডাকে ইন্তিকাল করেন।
আল্লাহ উনাকে মাফ করুন। (আমিন)
mawlana allama shah ahmad shafi was one of the best popular Muslim scholar in Bangladesh.
Comments
Post a Comment