গত শুক্রবার ২৬মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে আসেন ও তাকে লালগালিচায় গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়।
রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় জুমার নামাজের পরে অনেক মুসল্লীরা নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে জুতা হাতে বিক্ষোভ প্রতিবাদ প্রদর্শন করে।সেই সময় যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবং যারা বিক্ষোভ করেনি উভয় মুসল্লীদের উপর আওয়ামী ছাত্রলীগ,যুবলীগ,সেচ্ছাসেবক লীগের কতিপয় লোকজন,কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের লোকজন নির্যাতন ও অমানবিক হামলা চালায়,এমনকি একজনের দাড়ির উপরে আঘাত করে। বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশ গুলিবর্ষণ চালায়।একই সময়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মোদী বিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করে।সেখানেও অতি প্রগতিশীল উগ্র কট্টর সেকুলারিস্টরা(তাদেরকে আওয়ামিলীগের লোক বলা উচিৎ না) বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা ও নির্যাতন চালায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যায়।ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও একই রকম পরিস্থিতি হয়।তবে সেই জেলায় অনেকে আন্দোলন করতে গিয়ে উল্টা বাড়াবাড়ি করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনে অগ্নিসংযোগ ও ক্ষয়ক্ষতি করে।এরই মধ্যে শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে যাত্রাবাড়ীতে কিছু মাদ্রাসার ছাত্রসহ অনেকেই মোদী বিরোধী মিছিল প্রদর্শন করে।যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সেখানেও গুলিবর্ষণ করে। যা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ও অনলাইনে ছড়িয়ে পরে।রাত এগারোটার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ডাউন হয়ে পড়ে।শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে এভাবে নির্যাতন ও গুলিবর্ষনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। দেশের বিভিন্নমতের হকপন্থী আলেম উলামাগন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গত ২৭মার্চ শনিবার হেফাজতে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিল করে। সেখানে এসব ঘটনার বিচার দাবী করা হয়।একইদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিছু লোকজন বাড়াবাড়ি করে অগ্নিসংযোগ করে,ক্ষয়ক্ষতি চালায়।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা এলাকায় সন্ধ্যার আগে ও পরে উগ্র সেকুলারিস্টরা স্থানীয় এমপির উস্কানিতে ককটেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। তখন মাদ্রাসার মাইকে হাইয়া আলাল জিহাদ বলে ডাকাডাকি করে এ হামলার জবাব দেওয়া হয়। তখন মাদ্রাসায় অনেক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছিল।মাদ্রাসায় ক্লাস-পরীক্ষা চলাকালীন সময়েও এলাকায় অগ্নিসংযোগ হয়।অধিকাংশ আলেম উলামাগণ এসবের তীব্র নিন্দা জানান। আজ রবিবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল ডাকে।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ অধিকাংশ ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলা এই হরতালে সমর্থন দেয়।সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকা,চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ও এমন যেন না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে বললেন। এদিকে আজ মধুপুর পীরসাহেব মাওঃ আব্দুল হামিদ গুলিবিদ্ধ হন।এই তিনদিনে অসংখ্য মুসল্লীরা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাবস্থায় আছেন,ফরিদাবাদেও সংঘর্ষ হয়।তিনজেলায় অসংখ্য মানুষ নিহত হয়। এদিকে অবশ্য মাওঃ ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ,মাসিক আলকাউসার পত্রিকার সম্পাদক,মারকাযুদ দাওয়ার মাওলানা আব্দুল মালেক,বেফাক মহাসচিব,দাওয়াতুল হকের মুহিউস সুন্নাহ মাওঃ মাহমুদুল হাসান হুজুর,ফরিদাবাদ জামেয়ার মাওঃ আব্দুল কুদ্দুস সাহেব,ঢালকানগরের মাওলানা আব্দুল মতিন বিন হোসাইন,মুফতি মনসুরুল হক,ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি ফয়জুল্লাহ উনারা এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কিছুই বলেন নি,কোনো বিবৃতি দেয়নি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন,একজন ভিনদেশি-বহু গণহত্যার খলনায়কের জন্য স্বদেশীদের হত্যা ও গুলি নিশ্চয় নিন্দনীয়। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা ও জখম চরম ঘৃণ্য কাজ।মাওলানা সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আযহারীও একইভাবে নিন্দা জানান। ডঃ মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী প্রতি মসজিদে কুনুতে নাযেলা পড়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে"আলেম উলামা,সাধারণ জনগনের উপর যত নির্যাতন হবে সরকারও তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে "।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন (আমিন)
Comments
Post a Comment