খতমে নবুয়ত,মিলাদুন্নবী সাঃ ও সীরাতুন্নবী সাঃ প্রসঙ্গে কিছু কথা
লেখক: আহসান উদ্দিন
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)।যিনি শেষ নবী।কুরআনের ভাষায় রাহমাতুল্লিল আলামীন বা গোটা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত। যার জন্যে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতুল ফেরদৌস বানিয়েছেন।নবীজির রিসালাতে বিশ্বাস ইমানের একটা অন্যতম ভিত্তি,আবার তাকে শেষ নবী মানাও ইমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন "মুহাম্মদ সাঃ তোমাদের কারো পিতা নন,তিনি শেষ নবী "। মহানবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ হাদিসে তিনি নিজেই বলেছেন "আমিই শেষ নবী আমার পরে কোনো নবী নাই"।আরও বলেন " আমার উম্মাহর মধ্যে অচিরেই ৩০ এর মত ভন্ডনবী দাবীদার মিথ্যুকের আবির্ভাব ঘটবে"(সহীহ বুখারি)।খতমে নবুয়ত এটা আমাদের ইমান,রাসূল সাঃ এর পরে আর কোনো নবী ও রাসূল নাই এটা মুসলমানদের মান্য করা আবশ্যক।রবিউল আউয়াল মাস ইসলামের অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসেই রাসূল সাঃ এর জন্ম হয়েছে আবার এই মাসেই রাসূল সাঃ এর ওফাত ইন্তেকাল হয়েছিল। রাসূল সাঃ এর জন্ম হয়েছিল মক্কায় সুবহে সাদিকের সময়ে মা আমিনার কোলে৷ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলের মধ্যে আছে উত্তম আদর্শ। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ২১)
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আয়াতটি মহানবী (সা.)-এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারণ তথা তাঁর কথা, কাজ ও অবস্থার অনুসরণ বিষয়ক একটি মূলনীতি।
মহানবী সাঃ এর মাধ্যমেই ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করে। তাই এ নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন সেই অমর কথা "তাওহীদেরই মুর্শিদ আমার মুহাম্মাদের নাম "।
রাসূল সাঃ এর জন্মতারিখ নিয়ে পূর্ববর্তী ও বর্তমান সময়ের সকল মুসলিম ঐতিহাসিক,মুহাদ্দিস ও আলেম উলামাদের মাঝে অনেক ইখতিলাফ মতভেদ রয়েছে।তবে আমি যতটুকু জানি,রাসূল সাঃ এর জন্মতারিখ নিয়ে ৩ টি মত প্রচলিত,জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ আছে।সেগুলো হল ১.অনেকের মতে রাসূল সাঃ ০৮ অথবা ০৯ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন।এটা শফিউর রহমান মুবারকপুরীর আর-রহিকুল মাখতুম বা এজাতীয় অনেক গ্রন্থ কিতাবে পাওয়া যায়। ২.অনেকের মতে রাসূল সাঃ ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন।এটা সীরাতে ইবনে হিশাম সহ এজাতীয় অনেক গ্রন্থে পাওয়া গেছে।এই দুইটা মতকেই বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমান নির্ভরযোগ্য ও প্রসিদ্ধ বলে মনে করে বিশ্বাস করে ৷ ৩.অনেকে ১৭ রবিউল আউয়ালকে রাসুল সাঃ এর জন্মতারিখ মনে করেন। এটা মেইনস্ট্রিম শিয়া বা ইমামী শিয়াদের মত।
তাফসিরে মা’আরেফুল কোরআন প্রণেতা মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.) মহানবী (সা.)-এর জন্ম তারিখ সম্পর্কে আরো কিছু অভিমত উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন : এ বিষয়ে সবাই একমত যে নবী করিম (সা.)-এর জন্ম রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার দিন হয়েছিল। কিন্তু তারিখ নির্ধারণে চারটি বর্ণনা প্রসিদ্ধ আছে—২, ৮, ১০ ও ১২ রবিউল আউয়াল। এর মধ্যে হাফিজ মুগলতাই (রহ.) ২ তারিখের বর্ণনাকে গ্রহণ করে অন্য বর্ণনাগুলোকে দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু প্রসিদ্ধ বর্ণনা হচ্ছে ১২ তারিখের বর্ণনা। ‘তারিখে ইবনে আছির’ গ্রন্থে এ তারিখই গ্রহণ করা হয়েছে।
গবেষক মাহমুদ পাশা জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে ৯ তারিখ গ্রহণ করেছেন। এটি সবার মতের বিপরীত ও সূত্রবিহীন উক্তি। যেহেতু চাঁদ উদয়ের স্থান বিভিন্ন, তাই গণনার ওপর এতটুকু বিশ্বাস ও নির্ভরতা জন্মায় না যে তার ওপর ভিত্তি করে সবার বিরোধিতা করা যাবে। [মুফতি মুহাম্মদ শফি (করাচি) : সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ঢাকা, ১৯৯৬, পৃষ্ঠা ১৭]
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও দিন হিসেবে সোমবার সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। কারণ জীবনচরিতকাররা একমত যে রবিউল আউয়াল মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে সোমবার দিন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম। এই সোমবার ৮ অথবা ৯ কিংবা ১২—এটুকুতেই হিসাবের পার্থক্য রয়েছে মাত্র। (ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)। শিয়াদের মধ্যে অবশ্য ইসমাইলী আগাখানী,ইসমাইলী বোহরা,নুসাইরি ও যায়েদী শিয়ারা ১২ রবিউল আউয়ালকে নবিজীর জন্মতারিখ বলে বিশ্বাস করে।
রাসুল সাঃ এর জন্মসংক্রান্ত আলোচনাকে মিলাদ বা মিলাদুন্নবী বলে। অনেকেই মিলাদুন্নবী সাঃ ও সীরাতুন্নবী সাঃ বিষয়ে বিভ্রান্তির শিকার।তারা এটা সঠিকভাবে বুঝে না যা দুঃখজনক।মিলাদুন্নবী সাঃ হল নবীজির জন্মকালীন আলোচনা আর সীরাতুন্নবী সাঃ হল নবীজি সাঃ এর ৬৩ বছরের জীবনের আলোচনা। আমাদের এই উপমহাদেশসহ বিশ্বের অনেক মুসলমানরা নবীজি সাঃ এর জন্মতারিখকে বিশেষ করে ১২ রবিউল আউয়ালকে জশনে মিলাদুন্নবী সাঃ দিবস বা "ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)" বা المولد النباوي الشريف আল মাওলিদ আল নববী আশ শরীফ নামে উদযাপন করে থাকেন৷বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশে এই ১২ রবিউল আউয়ালকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সৌদি আরবে এর সরকারি ছুটি নাই,রাষ্ট্রীয়ভাবে মিলাদুন্নবী সাঃ পালন করতে পারে না।এই মিলাদুন্নবী উপলক্ষে অসংখ্য মুসলমান ইবাদত বন্দেগী করে,দোয়া দরুদ পড়ে,অনেক মুসলমান কবর জিয়ারত করে।অনেকেই এই ১২ রবিউল আউয়ালকে সকল ঈদের সেরা ঈদ,সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ,সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ ঈদ,ঈদে আজম,বড় ঈদ নামে অভিহিত করেন৷ আসলেই এসব নামের বাস্তবতা আছে কিনা।অনেক রাস্তায় রাস্তায়,বাড়িতে,গলিতে মিলাদুন্নবী সাঃ নিয়ে অনেক দেয়াল লিখন এবং ব্যানার পোস্টার বিলবোর্ড ও পতাকা বানাতে দেখি আমরা। অনেক মসজিদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ১২ রবিউল আউয়ালে কুরআনখানী,ওয়াজ আলোচনা,নাতে রাসুল ও কাসিদাহ,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়৷উপমহাদেশের অনেক জায়গায় জায়গায় ওয়াজ,নাতে রাসূল সাঃ,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়,অনেক মাহফিলে ইমাম বুসিরী অথবা কা'ব বিন যুহাইর রাঃ এর রচিত কাসিদায়ে বুরদাহ বা এজাতীয় নাত গজল গাওয়া হয়৷উপমহাদেশসহ বিশ্বের অনেক জায়গায় মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোকসজ্জা করতে দেখা যায়,অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান(স্কুল,মাদ্রাসা,কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়),সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান,অফিস,অনেক রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সামাজিক দল সংগঠন প্রতিষ্ঠান মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করে।অনেক রেডিও ও টিভি চ্যানেলে ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। আবার অনেকে ১২ রবিউল আউয়ালকে সীরাতুন্নবী সাঃ দিবস মনে করেন । সাধারণত একটা মিলাদ মাহফিলে শুরু হয় কুরআন তিলাওয়াত ও দিয়ে।তিলাওয়াতের পরে হামদ ও নাতে রাসূল সাঃ/ইসলামী গজল,ওয়াজ বয়ান নসিহা বা ধর্মীয় আলোচনা,যিকির ও দরুদ,নবীজি সাঃ এর প্রতি সালাম ও কিয়াম এবং দোয়া মোনাজাত হয়ে থাকে।দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়৷ কোনো কোনো মিলাদ মাহফিলে অনেক সময় কিয়াম ছাড়াই দোয়ার হয়। কোনো কোনো মিলাদ মাহফিলে সময় স্বল্পতার কারনে তিলাওয়াতের পরিবর্তে নাতে রাসুলের মাধ্যমে শুরু হয়
বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান,আফগানি
তবে অনেকসময় মিলাদুন্নবী সাঃ কে কেন্দ্র করে অনেক আপত্তিকর ও অপ্রীতিকর ঘটনা দেখা যায়।যেমন অনেকে মিলাদুন্নবির নামে জুলুস র্যালী করে কিন্তু সেখানে ঢাকঢোল ড্রাম বাদ্য ব্যান্ডপার্টি বাজানো ও নাচানাচির অভিযোগ শোনা যায়,অনেক জায়গায় ডিজেবক্স DJ বাজানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে, এটা অবশ্যই সত্য।যারা এসব করে তারা অবশ্যই ফাসিক ও বিদআতী হিসেবে প্রমাণিত।ভারত ও পাকিস্তানের কিছু অঞ্চলের মত বাংলাদেশে নেত্রকোনা,ফেনী,কুমিল্লা,ময়মনসিং
অনলাইনে দেখতে ও শুনতে পেয়েছিলাম যে পাকিস্তানে একবার কোনো এক অঞ্চলে জশনে মিলাদুন্নবী(সাঃ) এর ব্যানারে সাউন্ডবক্সে হিন্দি সিনেমার গান বাজিয়ে একজন পুরুষ ও একজন বেপর্দা মহিলার নাচানাচির ঘটনা হয়েছিল।ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।কোথাও কোথাও মিলাদের নামে নামাজকেও উপেক্ষা করা হয়।এসব কারণেই অনেক আলেমরা ১২ রবিউল আউয়াল মিলাদুন্নবী সাঃ পালন কে বিদাত বলে ও মিলাদ নিয়ে আপত্তি করে থাকেন৷রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন প্রত্যেক বিদাতই ভ্রস্টতা আর প্রত্যেক ভ্রস্টতার পরিণাম জাহান্নাম।অনেকেই মিলাদ ও মিলাদুন্নবীর ব্যাপারে অনেক বাড়াবাড়ি করে যেমন অনেকে মিলাদ কিয়াম করাকে ফরজ ওয়াজিব মনে করে,মিলাদুন্নবী সাঃ পালন করাকে ফরজে আইন মনে করা,যেসব মুসলমান সীরাতুন্নবী সাঃ মাহফিল করে তাদেরকে গালমন্দ করা বিষোদগার করা,মিলাদ ইস্যুতে কাউকে তাকফির করা ইত্যাদি। এটা ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক নয়৷ফুরফুরা দারুসসালাম দরবারের বর্তমান পীর মাওলানা শায়খ আব্দুল হাই মিশকাত সিদ্দীকি উনার ইসলামী আকীদা শিক্ষা বইয়ে লেখেন"যারা মিলাদ করে ও করে না তারা উভয়ই জাহান্নামে যাবে না,কিন্তু যারা মিলাদ নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তারা জাহান্নামে যাবে।"
সীরাতুন্নবী সাঃ এর মাহফিলে মূলত রাসূলুল্লাহ সাঃ ৬৩ বছরের এর জীবনি,আকীদায়ে খতমে নবুয়ত,শানে রিসালাত বিষয়ে,প্রিয়নবীর শ্রেষ্ঠ সাহাবী ও প্রিয়নবী আহলুল বাইতের মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে৷বিশেষ করে উলামায়ে দেওবন্দ তারা সীরাতুন্নবী সাঃ মাহফিলকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন৷ স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাকালীন সময়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে মিলাদুন্নবী সাঃ ও সীরাতুন্নবী সাঃ এর মাহফিল রাষ্ট্রীয়ভাবে শুরু হয়, তখন সেখানে এখনকার মত মিলাদ নিয়ে বাড়াবাড়ি ও নাজায়েজ বিদাতী কর্মকান্ডের নামগন্ধও ছিল না।এই সীরাতুন্নবী সাঃ মাহফিল এটা ইসলামী সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সাম্প্রতিক সময়ে মিলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে বিদেশে নবীজি সাঃ এর বিরুদ্ধে করা কটুক্তি ব্যঙ্গচিত্র এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। বিশেষ করে সবাই জানে গতবছর অক্টোবরে ফ্রান্সে নবীজি সাঃ এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র হলে উপমহাদেশ সহ সারাবিশ্বের হাজার হাজার মুসলিমরা মীলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী সাঃ মাহফিলে এর প্রতিবাদ জানায়৷অনেকে মিলাদুন্নবী পালন করে কিন্তু ইসলাম বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকায় আহমদী দাবীদার কাদিয়ানীদেরকে মুসলিম মনে করে। যা খুবই দুঃখজনক। কাদিয়ানীরা তারা আকীদায়ে খতমে নবুয়তের বিরুদ্ধে আঘাত দিয়েছে,তাদের মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নিজেকে মসিহ নবী দাবী করত তাই কুরআন সুন্নাহর আলোকে কাদিয়ানীরা ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রু৷যেকারণে মুসলিম উম্মাহর অধিকাংশ আলেমরা কাদিয়ানীদেরকে কাফের ও অমুসলিম ঘোষণা করেছে৷
উপমহাদেশে ও মধ্যপ্রাচ্যের যেসব আলেম,পীর,মাশায়েখ,দরবার,উলামা,
উলামায়ে কিরামদের দৃষ্টিতে রাসূল সাঃ এর জীবন আলোচনা করা উত্তম ও সওয়াবের কাজ,তবে এতে অনেক বিধিবিধান ও আদব রয়েছে৷
শায়খ মাওলানা মুফতি তাকী উসমানী মিলাদুন্নবী প্রসঙ্গে বলেছেন "ঈদে মিলাদুন্নবীতে কত অনুষ্ঠান হয়, ভাষণ-বক্তৃতা হয়, কত নাত-গজল পড়া হয়, মিলাদ-মাহফিল হয়। এত আয়োজন করে আমাদের জীবনে কি কোনও পরিবর্তন আসে? নবিজীর সুন্নত-আদর্শকে আঁকড়ে ধরার মানসিকতা তৈরী হয় কি? মোটেও না। জীবন আগে যেমন ছিলো তেমনই থাকে।
ভেবে দেখুন, নবীর শানে শত শত নাত-গজল মিলাদ-মাহফিল হলো, কিন্তু নবীজী দুনিয়াতে আসার মূল উদ্দেশ্যটিই বাস্তবায়ন হলো না, এর দ্বারা কি তিনি খুশি হবেন? তিনি কি শুধু তাঁর নাত-প্রশংসা শুনতেই দুনিয়ায় এসেছিলেন? যেই আদর্শ পৌঁছাতে এসে দ্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘তারা আমার এক হাতে চাঁদ আরেক হাতে সূর্য এনে দিলেও আমি পিছু হটবো না’ সেই আদর্শ আজ কোথায়? নাত-গজলই যদি উদ্দেশ্য হতো তবে কেন তিনি সারা জীবন এত কষ্ট-মোজাহাদা করে গেলেন!
আরো আফসোসের বিষয় হচ্ছে, অনেক সময় নবীর মহব্বতের মিলাদ-মাহফিলে হয় নবীজীর অপছন্দের সব কাজ। মাহফিলের আয়োজনের ব্যস্ততায় ফরজ নামাজই ছুটে যায়। এমনকি নারী-পুরুষের পর্দাহীন সহাবস্থানও দেখা যায়। তার চেয়েও সাংঘাতিক ব্যাপার, যেই বাদ্যযন্ত্রকে মিটাতে নবীজি দুনিয়ায় এসেছিলেন, সেই মিউজিক বাজিয়ে অনেকে তাঁর শানে নাত পাঠ করে।
নবীজির সাথে এ কেমন ইনসাফ! তাঁর শিক্ষাকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে তাঁর নামে আনন্দ অনুষ্ঠান!
আমার ভাইয়েরা, সংক্ষিপ্ত কথা হলো, এসকল আনুষ্ঠানিকতায় বিন্দুমাত্র লাভও হয় না। ক্ষেত্র বিশেষ বড় ধরনের গুনাহ হয়। তাই এ সকল ভিত্তিহীন আনুষ্ঠানিকতা বর্জন করে অন্তত এই হিসেবটুকু করি, কোন কোন সুন্নতের উপর আমি আমল করছি না। আজ থেকেই তার ওপর আমল শুরু করে দেই। প্রকৃত মুমিন নবীজির সুন্নতকে আঁকড়ে ধরে। এমন অসংখ্য সুন্নত রয়েছে যেগুলোর উপর আমল করতে মোটেও কষ্ট হয়না। ড. আব্দুল হাই আরেফী রহ. এর কিতাব ‘উসওয়ায়ে রাসূলে আকরাম’ সংগ্রহ করে সবাই নবীজীর সুন্নতগুলো নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। এটাই রবিউল আউয়ালের শিক্ষা।"
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন,ইত্তেবায়ে রাসূল ও সুন্নতে রাসূল সাঃ অনুসারে চলার ও শিরক বিদাত ফিতনা ফাসাদ থেকে দূরে থাকার তৌফিক দান করুন।সীরাতে রাসূল সাঃ এর আলোয় উজ্জীবিত হয়ে ফিলিস্তিন,সিরিয়া,কাশ্মীর,আরাকা
Comments
Post a Comment