হিজরী নববর্ষ পালন-- বনাম--মুহাররম
———————সমাধান——————
“পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।”
হিজরী নববর্ষ উদযাপন করাটা মুহাররমের কারবালার শিক্ষার পরিপন্থি বা কারবালার মতো হৃদয়বিদারক মাসে হিজরী কীভাবে পালন করে বুঝে আসে না, তারা কীভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করে ইত্যাদি ইত্যাদি!! এ কথাগুলো যারা বলেন, অনেকটা না বুঝেই বলেন।
এখন আসুন কেন হিজরী নববর্ষ উদযাপন করা উচিত?
১) ইংরেজি নবর্বষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্বেই অনেকটা নোংরামী, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, নারী-পুরুষের অবাধ মিলামেশা ও নানা অপরাধকে বেঁছে নেওয়া হয়।এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ঐ রাতে বাংলাদেশের মতো ধর্মপ্রাণ দেশেও আইন-শৃংখলা বাহিনী কে যথেষ্ট সজাগ অবস্থানে থাকতে হয়।(আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে তো গেইটই বন্ধ করে দেওয়া হয়) এখন এই অসুস্থ সংস্কৃতির মোকাবেলায় আমরা মুসলিমরা জাতিকে কী উপহার দিতে পেরেছি? মুসলিমদের কি কোন দায়িত্ব নেই? সুষ্টু ইসলামিক সংস্কৃতি চর্চা না করে শুধু “হায় হায় গেল সব রসাতলে” বলে বলি আওড়ায়ে কি লাভ? মুসলিমরা কতো সুন্দর, সুশৃংখল ও মার্জিতভাবে নববর্ষ পালন করে এটি বিশ্বকে দেখানো আমাদের উচিত।
২) মুসলিমদের একেবারেই নিজস্ব একটি বর্ষ আছে এটি জানানো কি আমাদের দায়িত্ব নয়? অথচ আমরা কয়জনই বা হিজরী সনের ব্যাপারে খোজখবর রাখি! এটি আমাদের গৌরবজ্জল এক ঐতিহ্য।
৩) প্রশ্ন যে, মুহাররম মাসে উদযাপন কেন? তো আরবি বছর তো মহররম থেকেই শুরু হয়। এখন যদি সফর মাসে হিজরী নববর্ষ উদযাপন করা হয়, আপনারা বলবেন ঐ মাসে তো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ ছিলেন ঐটা শোকের মাস। তারপর রবিউল আউয়ালে করলে বলবেন মিলাদুন্নবীর মাসে আবার কিসের নববর্ষ! তখন মার্চ-এপ্রিলে ইংরেজি নববর্ষ পালনের মতো হাসির ব্যাপার হবে আর কি!!
৪) মনে রাখতে হবে, মুহাররম মাসকে বরণ করা হচ্ছে না, বরণ করা হচ্ছে আগত পুরো ১২টি মাসকে, নতুন একটি বছরকে।বিগত বছরে ১২টি মাস চলে গেল, নতুন ১২টি মাস আসলো। মুহাররম কে আনন্দের সাথে বরণ করা হচেছ বিষয়টি এমন নয়।
৫) প্রশ্ন যে, শোকের মাসে শুভেচ্ছা জানাবে কেন? শুভ+ইচ্ছা = শুভেচ্ছা বা ভাল কিছু কামনা করা। এখন একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাল চাইবে না? অপরের জন্য ভাল ইচ্ছা জানান দেওয়া কি মুহাররমের শিক্ষার বিপরীত??
৬) হিজরী নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে থাকে হামদ, নাতে মুস্তফা সা., আলেমদের আলোচনা এবং কারবালার স্মরণ ইত্যাদি। এগুলোর একটিও কি কারবালার শিক্ষার পরিপন্থি?
৭) আলোচনা অনুষ্ঠানে দয়াল নবীজীর সা. হিজরত, হিজরত কেন্দ্রীক ঘটনাবলী ও সাহাবীদের ইতিহাস চর্চা হয়। এগুলোতো মুসলিমদের জানা উচিত।
৮) হিজরী নববর্ষে কেউ আনন্দ করে না বরং উদযাপন করছে। আনন্দ আর উদযাপন এক নয়। বরং দুটি ভিন্ন শব্দ, ভিন্ন বিষয়।
৯) আহলে বায়তের ভালোবাসা ইমানের অংশ। মুহাররম মাসে কারবালার ঘটনায় হিজরী পালনকারীদের কলিজা ছেঁড়া শোক ও কষ্ট কারো থেকেই কোন অংশে কম নয়।
Comments
Post a Comment