রত্নভান্ডার এটা একটা মুসলিম আধ্যাত্মিক গীতিকবিতার সংকলন, মাইজভান্ডার,চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত।
প্রথম অধ্যায় ফজু মিঞা চৌধুরী ছাহেবের রচিত “ তত্ত্ব রত্ন ” বহি হইতে সংস্কলিত ১ নং শে'র
আমার মনের ঠিক নাইরে-আমার দিলের ঠিক নাই । কোন পথে যাইব পন্থা উদ্দেশি না পাই।।
ক্ষণে রাজ বস্ত্র পরি - ক্ষণে পরী হয়ে উড়ি ।
কখনও বিমানে চড়ি - চৌদিকে বেড়াই ।।
ক্ষণে লই জমিদারি - ক্ষণে করি সওদাগরী ।
তক্তে বসি রাজা হই - হুকুম চালাই ।।
কখন যাই নাচে গানে - ক্ষণে থাকি সুরাপানে ।
লোকের ভয়ে কখন যাই - নামাজে দাঁড়াই ।।
প্রতিদিন করি মনে রাত্রে থাকব প্রভুর ধ্যানে ।
ফজরে কি খাব জপি - সজিদাতে যাই ক্ষণে সাধু বেশ ধরি- ঘন ঘন মালা নাড়ি ।
আচ্কান চোগা গায়ে মাথে শামলা উড়াই ।।
কিসে লোকে ভাল বলে আছি কেবল সেই ছলে ।
মনের কথা প্রকাশিলে লজ্জার অন্ত নাই ।।
ও মন ; তুমি কথা শুন - তুমি মোটা গাধা হেন ।
খেওনা খেওনা খেতে পানিরে ঘোলাই ।।
তুমি কি খাইয়াছ পারা মন হইয়াছে তার ধারা ।
শীঘ্র পারা বাহির কর মাইজভাণ্ডরে যাই ।
২ নং শে'র
তুমি কেন কর বল বল - (২)।
বলি - এ পাইলে তোরে দিবে রসাতল ।।
বিক্রম সাহসে বলে করিলা সমর-
বন পশু সিংহ ব্যাঘ্ৰ মারিলা বিস্তর
এজন্য বলি তোরে বলয় সকল ?
কাম , ক্রোধ , লোভ , মোহ , লজ্জা পঞ্চজন , তারাতো তোমার সঙ্গে সাথী অনুক্ষণ ।
কানে ধরি ঘুরায় তোরে , তারা যেন ঘুরায় কল ।।
পাঁচের মধ্যে একের শক্তি করিতে সংহার-
না পারিলে তবে কি তোর বলের বাহার
তোমারে যে বলী বলে ঐ সব পাগল ।।
৩ নং শে'র
ওরে বৃদ্ধ মন কি কারণ , কর ধন ধন ।।
নিধন সময় তোর-বাকী আছে অল্পক্ষণ।।
ছাড়িবে ছাড়িবে যাহা–কেন উপার্জনে তাহা ।
বিক্রয় করিতেছে আহা–মহামূল্য আয়ুধন ।।
অসময়ে যেই ধনে–যুঝিবে সমন সনে ।
কেন তাহা উপার্জনে–না দিলি না দিলি মন।।
যা কিছু ভক্ষিতে মনে–ভক্ষ্য তোর প্রতিক্ষণে । যোগাইতেছে সযতনে তব প্রিয় পুত্রগণ ।
ভাব যবে যমে ধরি–নিবে স্ত্রী পুত্র ছাড়ি ।
সে সমে আদর করি–ভক্ষ্য দিবে কোন জন ।।
এখনও তোমার দেহ—আছে পশু পক্ষী কহে ।
ছিড়ি না খাইছে অহ–কর অশ্রু বরিষণ ।।
এখনও রসনা আছে–কীটে পোকে না খাইছে ।
কাতরে প্রভুর কাছে–কর ক্ষমা পরার্থন ।।
এখনও শ্রবণ দোটী আছে–না ঢুকিছে মাটি ।
গুরু উপদেশ খাটি - করায় কর শ্রবণ ।।
এখনও নয়ন কায় - না মিশিছে মৃত্তিকায় ।
ফজু বলে হায়রে হায় - কি করিলি মৃঢ় জন ।।
Comments
Post a Comment