তবে আহলে হাদিস সালাফিরা এগুলোর ব্যাপারে আপত্তি করে একে বিদাত আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলে সাহরির সময়ে মসজিদে তাহাজ্জুদের আযান বা সাহরির আযান দেওয়া উচিৎ কেননা এটা হাদিস এবং অধিকাংশ আলেম উলামা দ্বারা প্রমাণিত। বুখারীর হাদিস নং ৬২১,আযান অধ্যায়, হাদিস নং ৬১৭,ফাতহুল বারী,২/১৩৮ এর দলিল দিয়ে সাহরির আযান বা তাহাজ্জুদের আযান এবং ফজরের আযান অর্থাৎ দুটো আযান দেওয়া অনেক উলামায়ে কিরামদের নিকট বৈধ তবে ইমামসাউরী, আবু হানীফা রহঃ এবং মুহাম্মদ এর বিপরীত মত ব্যক্ত করেন। অতঃপর এ নিয়ে উলামাদের ইখতিলাফ আছে। তবে ফজরের আযান দেয়া অবশ্যই উচিৎ। অনেকের মতে এই ডাকাডাকিকে শব্দদূষণ মনে করেন,এই ডাকাডাকিতে অসুবিধার অভিযোগ শোনা যায়।
ইন্দোনেশিয়া,মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইয়ে এই কাসিদা ডাকাডাকি দেখা যায় যেখানে অনেকে সাহুর সাহুর Sahur Sahur বলে ডাকাডাকি করে।কোথাও কোথাও অস্থির বিব্রতকর পন্থায়,কোথাও কোথাও ঢাকঢোল ও সানাই বাজায়। সেখানে কোনো কোনো জায়গায় বেডুগ Bedug নামক লম্বা ঢোল পিটিয়ে ডাকাডাকি করতে দেখা যায়। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের নাজরান,দাম্মাম সহ গুটিকয়েক এলাকায়,সংযুক্ত আরব আমিরাত এর অনেক জায়গায়,বাহরাইন,কুয়েত,ওমান,কাতা
রের অনেক জায়গায়,জর্ডান,ইয়েমেনের রাজধানী সান'আ,সা'দাহর কিছু এলাকায় বিশেষত দাম্মাজে ,তা'ইজ,মারিব, এডেন,হাদরামাউত,মুকাল্লাহ,মাহরি
য়া অঞ্চলে,ইরাক,ফিলিস্তিন,মিশর,সি
রিয়া,লেবানন,মরক্কো,তিউনিসিয়া,
আলজেরিয়া,লিবিয়া ও সুদানে সাহরিতে ডাকাডাকির রেওয়াজ দেখা যায়। ছোট ছোট ঢোল,দফ বাজিয়ে ডাকাডাকি করে যাকে মিসাহারাতি مساحراتي বলে। যা মাহের জেইন এর নাশিদ/গজল Ramadan Gana এর ভিডিওতে শুরুর দিকে দেখা যায়। যারা এই মিসাহারাতি করে তাদের অনেকেই ছোট বড় সবার কাছ থেকে টাকা পয়সা পায়। তুরস্কে ঢাক ঢোল বাজিয়ে কাসিদা গেয়ে রমজানে সাহরিতে ডাকাডাকির রেওয়াজ এখনো চলে। এটা উসমানীয় খিলাফতের সময় থেকে শুরু হয়েছিল। (
https://youtu.be/6l1N1XCW2vQ)
রমজানের আরেকটা দ্বিতীয় ঐতিহ্য ইফতারের সময় জানান দেওয়ার জন্যে তোপধ্বনি বা সাইরেন দেওয়া। বাংলাদেশ,ভারত ও পাকিস্তানের অধিকাংশ জায়গায় ইফতার এর সময়ের কয়েক সেকেন্ড আগে সাইরেন দিতে দেখা যায়। আগের দিনে ঢাকার আহসান মঞ্জিলসহ অনেক এলাকায় ইফতারের সময় শুরু নির্দেশ এর জন্য তোপধ্বনি ব্যবহৃত হতো। মধ্যপ্রাচ্যের কমবেশি অধিকাংশ দেশগুলোতে এবং তুরস্কে ইফতারের এই তোপধ্বনির ঐতিহ্য দেখা যায় যাকে মিদফা مدفع الافطار বলে। যা এখনও চলে,মধ্যপ্রাচ্যের অনেক টিভি চ্যানেলে এই তোপধ্বনি ও আযান সম্প্রচারিত হয় (
https://youtu.be/4tw6cLfgixY)। ইতিহাসের আলোকে এটা মূলত আব্বাসীয় ও উসমানী খিলাফতের সময়ে শুরু হয়েছিল।
পরিশেষে সকলের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি উন্নতি কামনা করছি।
Comments
Post a Comment