ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তর্জাতিক জোট : কেন হওয়া উচিৎ?? এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশগুলোতে বিভিন্ন ধারার মত ও পথের রাজনীতি দেখা যায়, বামপন্থী কমিউনিস্ট,ইসলামপন্থী এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেখা যায়। এশিয়া প্যাসিফিক ডেমোক্রেসি ইউনিয়ন APDU,ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেসি ইউনিয়ন IDU,গ্লোবাল গ্রিনস,প্রগ্রেসিভ ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি আন্তর্জাতিক জোট দেখা যায় যেখানে বাংলাদেশের বিএনপি APDU ও IDU এবং গ্রিন পার্টি বাংলাদেশ গ্লোবাল গ্রিনস এর সদস্য। বামপন্থী কমিউনিস্ট এবং সমাজতন্ত্রি মতাদর্শের দলগুলোর অনেক আন্তর্জাতিক জোট দেখা যায় যেমন সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনাল এবং IMCWP বা ইন্টারন্যাশনাল মিটিং অফ কমিউনিস্ট এন্ড ওয়ার্কার্স পার্টিস। বাংলাদেশের অনেক বামপন্থী দল তারা IMCWP জোটের সদস্য। কিন্তু ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল গুলোর তেমন আন্তর্জাতিক জোট দেখা যায় না। যা খুবই দুঃখজনক।
মধ্যপ্রাচ্য আরব ও আফ্রিকান দেশগুলোতে এবং ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়ায় আলোচিত সমালোচিত মুসলিম রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুড বা ইখওয়ানুল মুসলিমীন (الاخوان الامسليمين) এর অধীনে আন্তর্জাতিক অধিভুক্ত আছে সেসব দেশের অনেক রাজনৈতিক দল। ইরানে শিয়া সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনীর নেতৃত্বে Axis of Resistance এক্সিস অফ রেজিস্টেন্স এর আন্তর্জাতিক জোট আছে যেখানে ইরান,ইরাক,বাহরাইন সহ কয়েকটি দেশের ইরান সমর্থিত শিয়াদের অনেক রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সামরিক দল সেই জোটে আছে। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর কোন আন্তর্জাতিক জোট নাই যা খুবই দুঃখজনক। তাই উপমহাদেশে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তর্জাতিক জোটের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এ প্রবন্ধ লেখা হলো।
বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ায় অনেক ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল আছে। বাংলাদেশে বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৪৪ টি যার মধ্যে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সংখ্যা ১৪ টি। সেগুলো হলো জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল),তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এবং বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী নিবন্ধিত দলগুলোর সংখ্যা ছিল ১৩ টি কিন্তু এর মধ্যে আলোচিত সমালোচিত ও বিতর্কিত দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন তখন বাতিল হয়ে যায়। ২০১৮ সালে নিবন্ধিত ইসলামপন্থী বা ইসলামী দল ছিল ১২ টি। নিবন্ধিত ৪২ দলগুলোর মধ্যে ১৪টি ইসলামপন্থী দলগুলোর বাইরে বিএনপি,জাতীয় পার্টি (জাপা),জাতীয় পার্টি (জেপি),আন্দালিবুর পার্থের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি),বিএনএফ,ন্যাশনাল পিপলস পার্টি - এনপিপি,ববি হাজ্জাজের জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন -এনডিএম,বাংলাদেশ কংগ্রেস,বিএনএম এসব দলগুলো ডানপন্থী প্রভাবিত বা মধ্য-ডান হলেও তারা কেউই ইসলামপন্থী দল নয়। আওয়ামী লীগ,এলডিপি,গণফোরাম,কল্যাণ পার্টি এই দলগুলো পুরোপুরি ডানপন্থী অথবা পুরোপুরি বামপন্থী কমিউনিস্ট নয় বরং তারা হয়তো মধ্য-বাম/আধা সমাজতন্ত্রী অথবা কেন্দ্রপন্থী/Centric। বাংলাদেশের ১৯৭৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ আইডিএল ২০টি আসনে ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ১৪টি আসনে ,১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামাতে ইসলামী ১০টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ০৪টি আসনে বিজয়ী হয়,১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামাতে ইসলামী ১৮টি ও ইসলামী ঐক্যজোট ০১ টি আসনে বিজয়ী হয়,১৯৯৬ সালের জুন মাসে জাতীয় নির্বাচনে জামাতে ইসলামী ০৩টি ও ইসলামী ঐক্যজোট ০১টি আসনে বিজয়ী হয়,২০০১ সালের অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনে জামাতে ইসলামী ১৭টি,ইসলামী ঐক্যজোট ০৪ টি এবং জাপা ও ইসলামী আন্দোলন নেতৃত্বাধীন ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১৪টি আসনে বিজয়ী হয়। ২০০১ সালের পরে রওশন এরশাদ জাপার নেতৃত্বে এলে ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটটি ভেঙে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে হওয়া জাতীয় নির্বাচনে বিতর্কিত দল জামাতে ইসলামী ২ টি আসনে বিজয়ী হলেও ২০১২–১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়। ২০১৪ সালের জানুয়ারীর জাতীয় নির্বাচনে আরেক আলোচিত সমালোচিত বিতর্কিত দল তরিকত ফেডারেশন ০২টি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে এই একই দল ০১টি আসনে বিজয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে। সম্প্রতি ২০২৪ সালের ০৭ জানুয়ারীর ১২ তম জাতীয় নির্বাচনে যেসব ইসলামী দল অংশ নিয়েছে তারা কেউই বিজয়ী হয়নি৷
এসবের বাইরে নেজামে ইসলাম সহ অনেক অনিবন্ধিত ইসলামপন্থী দল দেখা যায়। অনিবন্ধিত দলগুলি হলো : নেজামে ইসলাম,গণসেবা আন্দোলন,ইসলামী ঐক্য আন্দোলন,মিসবাহুর রহমানের বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট,বাংলাদেশ ইসলামি পার্টি,বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলাহ,বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি,কোরআন ও সুন্নাহ বাস্তবায়ন পার্টি বাংলাদেশ,ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল,ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি,বাংলাদেশ জালালী পার্টি,বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক লীগ, জমিয়তে মুসলিমিন বাংলাদেশ, খেলাফত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী গণ আন্দোলন, জাতীয় ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তুল ওলামা পার্টি,বাংলাদেশ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন, বাংলাদেশ খেলাফাতুল উম্মাহ, বাংলাদেশ আকিমুদ দ্বীন মজলিস,ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি, নেজামে ইসলাম বাংলাদেশ,বাংলাদেশ তরীকত ফ্রন্ট,বাংলাদেশ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক ফোরাম ইত্যাদি।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ইসলামপন্থী বা মুসলিম রাজনৈতিক দলগুলো দুই ধরনের। একটা কেন্দ্রীয় বা জাতীয় আরেকটা প্রাদেশিক বা রাজ্য পর্যায়ে। ভারতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ০৬ টি এবং প্রাদেশিক বা রাজ্য পর্যায়ে ৬০ এর উপরে রাজনৈতিক দল আছে যার মধ্যে কেন্দ্রীয় বা জাতীয় পর্যায়ে ০৬ টি দল আছে কিন্তু সেখানে কোনো মুসলিম বা ইসলামপন্থী দল নাই। প্রাদেশিক বা রাজ্য পর্যায়ে ০৮ টি ইসলামপন্থী বা মুসলিম দল আছে। যাদের মধ্যে ০৮ টি দল সেদেশের পার্লামেন্ট লোকসভা, রাজ্যসভা এবং প্রাদেশিক পর্যায়ে বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতের ০৯ টি ইসলামপন্থী বা মুসলিম দলগুলো হলো ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ IUML ,আসাদ উদ্দিন ওয়াইসীর অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমীন AIMIM,অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট AIUDF,পপুলার ফ্রন্ট ইন্ডিয়া,রাষ্ট্রীয় উলেমা কাউন্সিল RUC,অল ইন্ডিয়া মাইনোরিটি ফ্রন্ট,পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি PDP, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ইন্ডিয়া SDPI ও ইন্ডিয়া সেক্যুলার ফ্রন্ট ISF ইত্যাদি।
পাকিস্তানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ১৭৫ টি। এর মধ্যে সেদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো হলো পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) বা পিএমএলএন PMLN,পিপলস পার্টি পিপিপি,পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ পিটিআই,মুসলিম লীগ (কিউ) PML-Q,জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (ফজলুর রহমান) ও তাদের অধীনে জোট মুত্তাহিদা মজলিসে আমাল এম এম এ MMA,জামাতে ইসলামী,আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি ANP, মুত্তাহিদা কৌমি মুভমেন্ট MQM,তেহরিকে লাব্বাঈক টিএলপি,আওয়ামী মুসলিম লীগ AML,ইস্তেহকামে পাকিস্তান পার্টি আইপিপি ইত্যাদি। পাকিস্তানের মুসলিম লীগ নামে ১৮ টি দল আছে যেমন : মুসলিম লীগ (নওয়াজ) বা পিএমএল-এন,মুসলিম লীগ(ক্বাফ),মুসলিম লীগ (জুনেজো),মুসলিম লীফ(ফাংশনাল),মুসলিম লীগ (জিয়াউল হক),শেখ রশিদের আওয়ামী মুসলিম লীগ,প্রয়াত পারভেজ মোশাররফের অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ,অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (জিন্নাহ),সালেহ জহুরের মুসলিম লীগ (শেরে বাংলা),নাইম হোসেনের মুসলিম লীগ কাউন্সিল,হাসান ফাতিমার মুসলিম লীগ অর্গানাইজেশন ও পাকিস্তান ন্যাশনাল মুসলিম লীগ। কিন্তু এগুলোর অধিকাংশই ডানপন্থী হলেও পুরোপুরি ইসলামপন্থী দল নয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ পিটিআই ইসলামী গণতন্ত্র শাসনব্যবস্থায় বিশ্বাসী হলেও দলটা পুরোপুরি ইসলামপন্থী দল নয়।
পাকিস্তানে ৯০টির উপরে ইসলামপন্থী দল আছে যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় দলগুলো হলো : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (মাওলানা ফজলুর) JUI-F,জামাতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তান(নুরানী) JUP-N,আওয়ামী মুসলিম লীগ AML,মারকাযী জমিয়তে আহলে হাদিস,জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের অপর অংশ(ইমাম নুরানী) JUP(IN),পাকিস্তান মুসলিম লীগ (জিয়াউল হক) PML-Z,তেহরিকে লাব্বাইক ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পাকিস্তান বা টিএলপি TLP,জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (সামিউল হক),পাকিস্তান সুন্নি তেহরিক, JUI-S,পাকিস্তান মারকাযী মুসলিম লীগ PMML রাহে হক্ক পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তান (মাওলানা শেরানী) JUI-P, সাজিদ নকভীর ইসলামী তেহরিক পাকিস্তান ITP (তেহরিকে জাফরিয়া TJP এর বর্তমান নাম), রাজা নাসির আব্বাসের মজলিসে ওয়াহদাতুল মুসলিমীন MWL,সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল,পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক PAT,হাফিজ সাঈদের মিল্লি মুসলিম লীগ,ডঃ আসিফ জালালীর তেহরিকে লাব্বাইক ইসলাম ইত্যাদি।এদের মধ্যে JUI-F এর নেতৃত্বে এমএমএ জোটে পাঁচটি দল আছে যেখানে বাকী দলগুলো হলো সাজিদ মীরের মারকাযী জমিয়তে আহলে হাদিস পাকিস্তান, বেরলভী আলেম আওয়াইস নুরানীর JUI (N),জামাতে ইসলামী এবং শিয়া আলেম সাজিদ নকভীর ইসলামী তেহরিক পাকিস্তান। পাকিস্তানে সদ্য শেষ হওয়া ১৫ তম ন্যাশনাল এসেম্বলি সংসদে ২০২২ সালের এপ্রিলের ঘটনার পরে পিটিআই ৩০টি আসনে ও জমিয়ত(ফজলুর) ও জামাতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন ০৫ দলীয় জোট এর ১৪টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করেছিল। পাকিস্তানের সিনেটে বর্তমানে পিটিআই ০৭ টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করছে,জমিয়ত (ফজলুর রহমান অংশ) ৫টি,মারকাযী জমিয়তে আহলে হাদিস ১ টি, জামাতে ইসলামী ১টি এবং ফাংশনাল মুসলিম লীগ ১টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করছে। সদ্য শেষ হওয়া ১৩ তম সিন্ধ প্রাদেশিক পরিষদে অধিবেশনে পিটিআই ৩০ টি আসন,০৫ দলীয় জোট এমএমএ ১টি আসনে ও তেহরিকে লাব্বাইক টিএলপি ০৩টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করে,১৭ তম পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে পিটিআই ১৮৪ আসনে,তেহরিকে লাব্বাইক টিএলপি অল্প কয়েকটি আসনে এবং সিপাহে সাহাবার রাজনৈতিক শাখা রাহে হক্ক পার্টি ০১ টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাকিস্তানে দেওবন্দী কওমী ঘরানার দলগুলোর কধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (ফজলুর রহমান),জমিয়ত(সামিউল হক),জমিয়ত (মাওঃ শেরানী),শিয়া বিরোধী দল আওরঙ্গজেব ফারুকী ও মুয়াবিয়া আজম তারিকের সিপাহে সাহাবা SSP ASWJ এর রাজনৈতিক শাখা রাহে হক পার্টি ইত্যাদি জনপ্রিয়। সাজেদ নকভীর ইসলামী তেহরিক ও রাজা নাসির আব্বাসের মজলিসে ওয়াহদাতুল মুসলিমীন দুটো দলই শিয়া সম্প্রদায়ের ইসলামপন্থী দল। সেদেশের বেরলভী রেজভী সুফি ঘরানার জনপ্রিয় দলগুলো হলো খাদেম হুসাইন রিজভী ও তার ছেলের দল তেহরিকে লাব্বাইক টিএলপি, শাহ আহমেদ নুরানীর দল জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তান JUP (বর্তমানে দ্বিখণ্ডিত),আল্লামা সারওয়াত ইজাজ কাদেরী ও আহমেদ বিলাল সেলিম কাদেরীর পাকিস্তান সুন্নি তেহরিক (আগে তারা দ্বিখণ্ডিত ছিল এখন বর্তমানে ঐক্যবদ্ধ),হামিদ রেযার সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল এবং ডঃ তাহির উল কাদেরীর পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক। খালিদ মাসুদ সিন্ধুর গঠিত পাকিস্তান মারকাযী মুসলিম লীগ একটা নিরপেক্ষ দল যেটা দেওবন্দী–আহলে হাদিস সালাফি–বেরলভী মিশ্র প্রভাবিত কিন্তু এটা জামায়াত–উদ–দাওয়া নেতা হাফিজ সাঈদ দ্বারা প্রভাবিত বলে অনেক ভারতীয় ও পাকিস্তানী গণমাধ্যম অভিযোগ করছে এবং তারা বলছে এটা নাকি হাফিজ সাঈদের মিল্লি মুসলিম লীগ এম এম এল এর বিলুপ্তি করে নতুন সংঘটিত দল। নেপাল ও ভূটানে মুসলিমদের নিজস্ব কোন রাজনৈতিক দল নাই।
শ্রীলঙ্কায় মুসলিমদের কয়েকটা নিজস্ব রাজনৈতিক দল আছে। শ্রীলঙ্কায় সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন হয়ে থাকে। সেদেশে মুসলিমদের একটা রাজনৈতিক জোট আছে যার নাম মুসলিম ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স MNA যারা সেদেশের পার্লামেন্ট সংসদে একটি আসনে আছে,এর আগে ন্যাশনাল ইউনিটি অ্যালায়েন্স নামে মুসলিমদের নিজস্ব রাজনৈতিক জোট ছিল কিন্তু সেটা ২০১০ সালে বিলুপ্ত হয়ে সেই জোটের নেতারা সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার দল SLFP তে চলে যায় । বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় মুসলিমদের নিজস্ব রাজনৈতিক দলগুলো হলো, শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস বা SLMC,অল সিলন মাক্কাল সংগ্রেস ASMC, ন্যাশনাল কংগ্রেস, মুসলিম তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স MTNA। এই চার দলের মধ্যে তিন দল এবং মুসলিম ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স শ্রীলঙ্কার বর্তমান জাতীয় পার্লামেন্টে মোট ১১-১২টি আসনে প্রতিনিধিত্ব করছে।
মালদ্বীপে সেদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশই বলা চলে ইসলামপন্থী দল কিংবা ইসলামী মূল্যবোধ অনুশাসন ভাবাদর্শের অনুসারী। মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস PNC, সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ নাশিদ ও ইব্রাহিম সোলিহের দল মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি MDP,কাসিম ইব্রাহীমের দল জুমহুরি বা রিপাবলিকান পার্টি,সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইউম ও আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের দল প্রোগ্রেসিভ পার্টি অফ মালদ্বীপ PPM, আহমেদ শিয়ামের মালদ্বীপ ডেভলপমেন্ট অ্যালায়েন্স MDA, মোহাম্মদ নাজিমের মালদ্বীপ ন্যাশনাল পার্টি, ইমরান আব্দুল্লাহর আদালাথ পার্টি বা জাস্টিস পার্টি, আব্দুল্লাহ জাবিরের দিভেহী রায়িথুঙ্গে পার্টি বা মালদ্বীপ পিপলস পার্টি,মামুন আব্দুল গাইউমের নতুন দল মালদ্বীপ রিফোর্ম মুভমেন্ট,হাসান জারিরের আইডিপি ইত্যাদি অধিকাংশ দলই বলা চলে মালদ্বীপের ইসলামপন্থী দল বা ইসলামী ভাবধারা মতাদর্শের অনুসারী দল যদিও এই দলগুলোর মধ্যে কয়েকটি দল ভারত প্রভাবিত আর বাকী দলগুলো চীন প্রভাবিত। আফগানিস্তানে হিযবে ইসলামী (হেকমতিয়ার), হিজবে ইসলামী (ইউনুস খালিস),সেদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুরহানউদ্দিন রাব্বানী ও তার ছেলে সালাউদ্দিন রাব্বানীর দল জামিয়াত ইসলামী আফগানিস্তান,আহমদ মাসুদের এনআরএফ আব্দুল রাসূল সাইয়াফের ইত্তেহাদে ইসলামীর রাজনৈতিক সংস্করণ ইসলামিক দাওয়াহ অর্গানাইজেশন অফ আফগানিস্তান বা তানযীমে দাওয়াত আফগানিস্তান,মোহম্মদ নবী মুহাম্মদী ও কালাম উদ্দিন মোহমান্দের হারাকাতে ইনকিলাবে ইসলামী,সিবগাতুল্লাহ মোজাদ্দেদীর নেজাতে জাবহাতে মিল্লী,হামিদ গিলানীর মাহাযে মিল্লী,হোসাইন আনওয়ারীর হেযবে হারকাতে ইসলামী,আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রশিদ দোস্তামের জুনবিশে মিল্লী,
Comments
Post a Comment