কে এই রাশেদ খান মেনন?
রাশেদ খান মেনন। মরহুম আবদুর রহমান বিশ্বাস, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বরিশাল শান্তি কমিটির প্রধান তার দুলাভাই। বিএনপি নেত্রী সেলিমা রহমান তার বোন। তারা অনেক ভাই বোন। আ জ ম ওবায়দুল্লাহ খান, (কবি, কথাসাহিত্যিক, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত), এনায়েতুল্লাহ খান (সম্পাদক), সাদেক খান (সুবুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক), আপনারা সবাই ভাইবোন। আপনার মতো আর একজনও হননি। সবাই বিশেষ ভদ্রলোক ও সমাজে সম্মানিত। আপনি শুরু থেকে ব্যাতিক্রম।
শুনেছি, মেনন নামটিও আপনার আব্বা আম্মার রাখা নয়। সব ভাই বোন আবদুল জব্বার খানের বংশীয় খান পদবীটিকে ধারণ করলেও আপনি ভারতের কৃষ্ণ মেননের পদবীটিকে ধারণ করেছিলেন সদ্য তারুণ্যে। স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, ছিলেন পিকিংপন্থী। বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোটা আপনার,মতিয়া চৌধুরী আর হাসানুল হক ইনু ও সমমনাদের স্বপ্ন ছিলো। আপনি গোপন সংগঠন করতেন।
এ দেশে সন্ত্রাসবাদের জনক আপনারা। আপনাদের উগ্রবাদী মতবাদ ও অস্ত্রের ঝনঝনানি রক্তাক্ত করেছে বাংলাদেশের মাটি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তার সাথে নিষ্পাপ নারী, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও নিরপরাধ বহু মানুষের জীবন গিয়েছিল আপনাদের তৈরি পরিবেশের সুযোগে। আপনি একবার গুলি খেয়েও আল্লাহর রহমতে জীবনে বেঁচে গিয়েছেন। আল্লাহ আপনাকে বিনাভোটে এমপি আর বিনা কারণে মন্ত্রী করেছেন। কিন্তু আপনি আল্লাহর শোকর গোজার বান্দার মতো আচরণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার প্রতি যে দয়া,করুণা ও অতুলনীয় উত্তম আচরণ করেছেন, আপনি তা পাওয়ার উপযোগী কি না সেটা আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
এসব অযাচিত ও অযৌক্তিক কিছু বিষয় নিয়েই আমি ১২ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে অভিমান অব্যাহত রেখেছি। কারণ তিনি কাকে কী দিতে হয়,অতিরিক্ত দয়ার কারণে তা বিবেচনা করার সময় ভুলে যান। এই মেনন সাহেবের আব্বাকে যুক্তফ্রন্টের সময় মাওলানা আতহার আলী র. বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে স্পিকার বানিয়েছেন। আমার আব্বা তখন লিয়াজোঁ টিমের কো-অর্ডিনেটর। হক, ভাসানী, আতহার আলী সরকারের সময়ই বঙ্গবন্ধু প্রথম এমপি হন।
আমার আব্বা লবিংয়ে বহু নেতা দাবী করে সোহরাওয়ার্দী, আতহার আলী প্রস্তাবিত মন্ত্রীসভায় প্রথমবারের মতো শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবকে সমবায় ও পূর্তপ্রতিমন্ত্রী করেন । আব্বা তখন মাওলানা আতহার আলী র. এর পলিটিকাল সেক্রেটারির দায়িত্বের পাশাপাশি পার্টির মুখপাত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে ছুটে গেলেন কে এম দাস লেন। তফাজ্জল হক মানিক মিয়া,আব্বাজি মাওলানা আতাউর রহমান খান ,শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক সাহেবের বোনের ছেলে আজিজুল হক নান্না মিয়া তখন বসে আলাপ সালাপ করছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে দেখে সবাই খুশি হলেন। আব্বা আবদুল ওয়াদুদ সাহেবকে বললেন, দৌড়ে গিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসেন। আবদুল ওয়াদুদ সাহেব হচ্ছেন ডা. দীপুমনির পিতা।
ইত্তেফাকের জিএম। মিষ্টিমুখ শেষে আব্বা তখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বখশিবাজার চন্দবাড়ি,বড়কাটরা ও লালবাগে গিয়ে যুক্ত ফ্রন্টের প্রায় ৪০ জন ইসলামী নেতা ও যুগশ্রেষ্ঠ উলামা-মাশায়েখের সাথে তার সাক্ষাত, পরিচয় ও দোয়া নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। মেনন,মতিয়ার নাম তখনও উল্লেখযোগ্য হয় নি,তবে নাস্তিক, কমিউনিস্ট ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের, বর্তমান বাংলাদেশের স্বাভাবিক সম্প্রীতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে তাদের দূরত্ব ও বিরোধ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে সেদিন তার আলোচনার বহু কিছু আমাকে আব্বা বলে গেছেন।
সময়ে সব লিখে ফেলতে হবে। আব্বাজির আত্মজীবনীতেও অকপটে তিনি বহুকিছু লিখে গেছেন, ইনশাআল্লাহ সেটিও কিছু দিন পর বেরুবে। মেনন সাহেবের ইসলাম বিদ্বেষ আর আল্লামা শফী দা.বা. সহ দেশের সব আলেমকে জঘন্যতম ভাষায় আক্রমণ করে সংসদে দেওয়া তার বক্তব্য শুনে আর নীরব থাকতে পারি নি। বঙ্গবন্ধুর সচিবের মেয়ে শিরিন শারমিন চৌধুরী এখন স্পিকার। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এ বক্তৃতা এক্সপাঞ্জ হওয়া চাই। ড. শিরিন আমার কিশোরগঞ্জের পুত্রবধূ। রেসপন্স জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আবেদন, আদর করে দুধকলা খাইয়ে পুষেছেন, এবার লাগাম টেনে ধরুন। দেশ অশান্ত হতে পারে। এই অভাজন কলম ধরলে আর ১৫/২০ টি আশেক পয়েন্টে ফোন দিলে দেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের দাবানল জ্বলে উঠবে। এ মুহূর্তে আমি তা চাইনা। আল্লামা আহমদ শফী ও তার শত শত আধ্যাত্মিক জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার, কর্ণেল ও মেজররাও আপাতত এমনটা চায়না। আমরা চাই, সিগারেটের আগুন নেত্রীই জুতার নিচে পিষে নিভিয়ে ফেলুন। আগুন বড় হতে দিবেন না। আপনি বিচার না করলে, নাস্তিক মুরতাদ এবং বঙ্গবন্ধু তথা বাংলাদেশ বিদ্বেষিদের কিন্তু বাংলাদেশের ১৫ কোটি তাওহীদী জনতা ছাড়বে না।
Comments
Post a Comment