বিশ্বকাপ সংস্কৃতি: আমাদের অবক্ষয়ের নগ্ন রূপ(From ourislam24.com আওয়ার ইসলাম থেকে)
যুুবায়ের ইবরাহীম
ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানও খেলছে। তারা কেমন খেলছে জানি না। খেলা দেখি না, খোঁজ-খবর সবই সংবাদমাধ্যম ও রেডিওতে।বাংলা-পাক-আফগান তিনটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ। বাংলার ও পাকের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থাতে ভয়াবহ বিপর্যয় চলছে। আফগান সকল দিক থেকে বিপর্যস্ত। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। একদিকে দখলদার বাহিনী ও সরকার আরেকদিকে তালেবান মুক্তিবাহিনীর লড়াই চলছে।বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত গোটা আফগান। জাতির ও জাতীয় মুক্তির এ কঠিন, সংকট ও দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে আফগানিদের একটা ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে ব্যস্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশ পুনর্গঠন হওয়ার আগে ব্যস্ত হয়ে পড়ল অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে।বিশ্বকাপ খেলাটা অন্তত মুসলিমদের সাথে যায় না। একটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর মুক্তির লড়াই বাদ দিয়ে ক্রিকেটের মতো একটা ফালতু খেলায় ব্যস্ত থাকা আগামীর আফগানকে বিরাট ও বিপুল সাংস্কৃতিক সংকটে ফেলবে।জাতীয় মুক্তি বিলম্বিত হবে। জয় দীর্ঘসূত্রতা পাবে। আদৌ জয় পাবে কিনা সন্দেহ। আফগানের এই প্রজন্ম মুক্তির লড়াই থেকে বিমুখ হতে থাকবে। পরাধীনতা স্থায়িত্ব লাভ করবে। অর্থনৈতিক উন্নতি মারাত্মকভাবে হোঁচট খাবে। রাজনৈতিক পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। ফলে তালেবানের মুক্তির লড়াই ও প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অভ্যন্তরীণ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।এরই মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও সম্প্রসারণবাদের গোলামি আফগানিদের মন মগজে ঢুকে যাবে। যেমন করে বাংলাদেশের মুসলমানদের মন মগজে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও সম্প্রসারণবাদে গোলামি ঢুকে গেছে।বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের ও যুবক-যুবতীদের বিপুল একটি অংশের মন মগজে মানসিকতায় মুক্তির জোশ নেই। দেশ গোল্লায় যাক, তবুও তারা খেলা দেখবে। এভাবে খেলায় আর মেলায় তরুণ-তরুণি মেতে থাকলে সম্প্রসারণবাদের অনেক অনেক লাভ। এ ক্রিকেট খেলা আফগানিস্তানের মুক্তির লড়াইকে দীর্ঘসূত্রতায় ফেলবে। আত্মপরিচয়ে নতুন সংকট ও হীনমন্যতায় ভোগাবে।আফগানিস্তানের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ যখন ক্রিকেট খেলার মতো ফালতু বিষয়ে লিপ্ত ও মত্ত হয়ে যায়, তখন তাদের জাতীয় মুক্তির বিষয়টি বিশাল এক সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংকটের চোরাবালিতে আটকা পড়ে। ক্রিকেটের পেছনে আফগান সরকার যে পরিমাণ বরাদ্দ ও ভর্তুকি দিচ্ছে, তা দিয়ে তাদের শিক্ষার অনেক উন্নয়ন করতে পারত, এতে কোন সন্দেহ নেই।
একই কথা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশে এখনও চার কোটির অধিক মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে জীবনাতিপাত করছে। সাক্ষরতার কাঙ্খিত মান এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। দূর্নীতি গোটা দেশ ও জাতিকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সেখানে এ প্রজন্ম ব্যস্ত ক্রিকেট নিয়ে।
Comments
Post a Comment