হুসেন মুহাম্মদ এরশাদ। বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক নেতা, সাবেক সেনা প্রধান, সাবেক রাষ্ট্রপতি। তিনি ভারতের কুচবিহারে ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।ফেব্রুয়ারি। পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলায়। বাবা মকবুল হোসেন ও মা মজিদা খাতুনের চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে এরশাদ ছিলেন দ্বিতীয়। অবশ্য ভাইদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। বাবা-মা আদর করে পেয়ারা নামে ডাকতেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে।
এরশাদের স্কুল এবং কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর শহরে। ১৯৪৬ সালে দিনহাটা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন করেন তিনি। এরপরে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখানে পড়ার সময় মনোযোগ দেন লেখালেখির দিকে। ছিলেন কলেজ ছাত্রসংসদরে সাহিত্য সম্পাদক।
বাবা মকবুল হোসেন ছিলেন নামকরা আইনজীবী। এরশাদেরও ইচ্ছা ছিল বাবার মতো বড় আইনজীবী হবেন। ১৯৫০ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় আসেন তিনি। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাত্র দুইশ টাকা নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন এরশাদ। বাবার ওপর চাপ কমাতে নিজেই শুরু করেন টিউশনি। বাবার মত বড় আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ ক্লাসে পড়ার পাশাপাশি ভর্তি হন ল কলেজে।১৯৪৮ সালে এরশাদ কারমাইকেল কলেজের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হবার গৌরব অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়েরও ক্রীড়া দলের তিনি ছিলেন কৃতি খেলোয়াড়। ১৯৫৩ থেকে ৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা অঞ্চলের ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ১৯৫২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে এরশাদ কমিশন লাভ করেন।১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধেও অংশ নেন তিনি। সেনা কর্মকর্তা হিসেবে এরশাদ প্রথম নিয়োগ পান ২ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কোয়েটে স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স সমাপ্ত করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে শিয়ালকোটে ৫৪ ব্রিগেডের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট অ্যাডজুট্যান্ট ও কোয়াটার মাস্টার জেনারেল ব্রিগেড মেজর ছিলেন।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেননি এরশাদ। ১৯৭৩ সালে ১২ ডিসেম্বর এরশাদ কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সরকার উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে পাঠায়। সেখানেই প্রশিক্ষণকালে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন। ওই বছর আগস্ট মাসে আবার পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হন তিনি।
১৯৭৮ সালের ১ ডিসেম্বর এরশাদ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৯ সালের ৭ নভেম্বর তাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়। ১৯৮০ সালের ৩০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সেনা বিদ্রোহ দমন করেন এরশাদ।
Comments
Post a Comment