Skip to main content

প্রিয় নবিজির ﷺ সম্মানিত আম্মা-আব্বা কী জাহান্নামে?"-Syed Golam Kibria Azhari

 "প্রিয় নবিজির ﷺ সম্মানিত আম্মা-আব্বা কী জাহান্নামে?"

-------------------------------------------------------------------

সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী 



আসলে এই বিষয়ে আলোচনা করতে মোটেও ভাল লাগে না। খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। আর আলোচনা করা জরুরীও না, নিরব থাকাই উত্তম। কিন্তু শত শত প্রশ্ন আসে এবং ইউটিউব ফেসবুকে ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার কারণে আলোচনা করতে বাধ্য হই। 


মুসলিম শরিফে আসা দুইখানা হাদিসের ভিত্তিতেঃ 

১. অনেকেই আপত্তি তুলেন যে, আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে নবী করিম ﷺকে মা আমিনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি দেয়া হয়নি, কবর জিয়ারত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তো ভাই, এর মানে এই না যে মা আমিনা জাহান্নামী, মায়াজাল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহাল আজিম। হয়ত জান্নাতের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে এজন্য ইস্তিগফার করতে না করেছেন আল্লাহ তায়ালা। How do we know? হয়ত প্রয়োজন ছিল না মাগফিরাত কামনা করার। এবং সেই হাদিসে এমন কোন সুস্পষ্ট শব্দ আসেনি যাতে বুঝা যায় যে তিনি জাহান্নামে। নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। 


২. "আমার বাবা ও তোমার বাবা জাহান্নামে" নবী করিম ﷺর এই কথার ব্যাখ্যায় অনেকেই বলেছেন যেহেতু হজরতে আব্দুল্লাহ অনেক ছোটবেলা মারা গেছেন সেহেতু বাবার জায়গায় চাচা আবু তালিবকে বাবা হিসেবে ইংগিত করে, আমার বাবা জাহান্নামে বলেছেন নবীজী ﷺ।  আরবে এরকম রীতি ছিল। কারণ মা বাবা না থাকাতে আবু তালিব নবী করিম ﷺকে লালন পালন করেন খুবই ছোটবেলা থেকে৷ শেষ জীবন পর্যন্ত নবী করিম ﷺকে তিনি সাপোর্ট দেন। যেভাবে ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের বাবা হিসেবে আজরকে বলা হয়েছে কুরআন মাজিদে। অথচ আজর মূর্তিপূজারি ছিলেন৷ মূর্তিপুজারি ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের বাবা হতে পারেন না৷ কারণ উনার বংশে শেষ নবী ﷺএসেছেন। আর আল্লাহ পাক বলেছেন, "আমি আপনাকে সেজদাকারীদের মধ্যে প্রেরণ করেছি" (সূরা শুয়ারা, সূরা নং-২৬,  ২১৯ নং আয়াত) মুফাসসির সর্দার বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন,وروى البزار وابن أبي حاتم ، من طريقين ، عن ابن عباس أنه قال في هذه الآية : يعني تقلبه من صلب نبي إلى صلب نبي ، حتى أخرجه نبيا .


 " (হজরত আদম আ. থেকে হজরত আব্দুল্লাহ পর্যন্ত) নবী থেকে নবি এভাবে স্থানান্তর  করা হয়েছে শেষ পর্যন্ত (হজরতে আব্দুল্লাহর মাধ্যমে) নুরনবীর নবুয়াত প্রকাশ করা হয়েছে।" (তাফসিরে ইবনে কাসিরে এই আয়াতের তাফসির দেখুন, ইমাম বাজ্জার ও ইবনে আবি হাতিম তাদের কিতাবেও এই বর্ণনাটি ভিন্ন ভিন্ন দুটো সনদে এনেছেন) 


কাজেই নবি কারিম ﷺর সরাসরি উর্ধ্বতন পুরুষ কেউ মুশরিক অবিশ্বাসী হতে পারেন না। 


আরবীতে আবুন শব্দটি চাচা অর্থেও ব্যবহৃত হয়ঃ অকাট্য প্রমাণ কুরআন মাজিদ থেকেঃ 

-----------------------------------------------------------------

 কুরআন ও সুন্নাহতে "আবুন" শব্দখানা চাচা দাদা বাবা উর্ধ্বতন পুরুষ সবার জন্যই এসেছে। "ওয়ালিদ" আসলে কেবলমাত্র জন্মদাতা পিতা বুঝায়। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম দোয়া করেছেন যা কুরআন মাজিদে এসেছে, রাব্বানাগফিরলি ওয়া লি ওয়ালিদাইয়্যা... হে আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের মা-বাবাকে... অথচ কুরআন মাজিদেই এসেছে,  "ওয়া ইজ কালা ইবরাহীমু লি আবিহি আযার..." যখন ইবরাহীম তার আবুন  (চাচা) আজরকে বললেন..."। এই আয়াতে এসেছে আবুন। অর্থাৎ বাবার ভাই চাচা। উনার জন্মদাতা পিতা মুশরিক হলে তো ক্ষমার দোয়া করতেন না। মুশরিকের জন্য ক্ষমা চাওয়া হারাম। অথচ আজর মুশরিক ছিলেন। কাজেই তিনি ইবরাহীম আলাইহিস সালামের জন্মদাতা ওয়ালিদ হতে পারেন না। উনার জন্মদাতা ওয়ালিদে মুহতরমের নাম হাদিসের রেওয়ায়াতে এসেছে, তারেহ বা তারিখ। তারেহ বা তারিখ খুব অল্প বয়সে ইন্তিকাল করাতে আজর ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের লালন পালন করেন। 


কাজেই আবুন শব্দটি চাচা অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এখান থেকে আরেকটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার সরাসরি  উর্ধ্বতন কোন পুরুষ মুশরিক বা অবিশ্বাসী ছিলেন না। এখন প্রিয় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার হাদিস, "ইন্না আবাকা ওয়া আবি ফিন্নার" নিশ্চয়ই তোমার বাবা ও আমার বাবা জাহান্নামে, এর দ্বারা ওয়ালিদে মুহতরম হজরতে আব্দুল্লাহ উদ্দেশ্য না, যদি তাই হত তবে ওয়ালিদ শব্দ দিয়ে আসত, আবুন শব্দ দিয়ে না। যেভাবে قَالُوا نَعْبُدُ إِلَٰهَكَ وَإِلَٰهَ آبَائِكَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ

এই আয়াতে ইয়াকুব আলাইহিস সালামের আবুন বা  পিতা হিসেবে ইসমাইল আলাইহিস সালামকেও বলা হচ্ছে অথচ তিনি ছিলেন চাচা যা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। ইবরাহীম আলাইহিস সালামকেও আবুন বলা হয়েছে অথচ তিনি ছিলেন ইয়াকুব আলাইহিস সালামের দাদা। জন্মদাতা পিতা ছিলেন ইসহাক আলাইহিস সালাম। কাজেই আবুন শব্দটি চাচার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয় তা নিশ্চিত।  নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার জন্মদাতা পিতা ওয়ালিদে মুহতরম হজরতে আব্দুল্লাহ জাহান্নামে তা কখনোই এই হাদিসের উদ্দেশ্য না। বরং উনার চাচা হতে পারেন। 


সূরা কাহফে সেই দুই ইয়াতিম ছেলে যাদের দেয়াল মেরামত করেছিলেন খিজির আ. মুসা আ. কে সাথে করে, সেই ইয়াতিম দুই ছেলের সপ্তম উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ সম্পর্কে বলা হয়েছে,  ওয়া কানা আবুহুমা সালিহা। আর তাদের পিতা ছিলেন নেককার। এখানে সপ্তম উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষের ক্ষেত্রে আবুন এসেছে। কাজেই জন্মদাতা পিতার ক্ষেত্রেই শুধু আবুন শব্দখানা ব্যবহৃত হয় এমন নয়৷ 


আরো অনেক ব্যাখ্যা আছে এই দুই হাদিসের ইমাম নববীর শরহে মুসলিমে। নিচের লিংকে আমার এই ভিডিওটা দেখুন৷ এই দুই হাদিস কুরআন মাজিদের অনেক আয়াতের বিপরীতে৷ 


এই দুই হাদিসের সনদ নিয়েও কেউ কেউ কথা বলেছেন। মুসলিম শরিফের এই দুটো হাদিস শুধুমাত্র মুসলিম শরিফেই এসেছে, বুখারি শরিফে আসে নাই। অর্থ্যাৎ মুত্তাফাক আলাইহি নয়। কাজেই সনদের শক্তি এখানেও কিছুটা কমে যায়।


 ، سوى أحرف يسيرة تكلم عليها بعض أهل النقد من الحفاظ كالدارقطني وغيره ، وهي معروفة عند أهل هذا الشأن " انتهى . "مقدمة ابن الصلاح" (ص10) .


 শায়খ ইবনুস সালাহ মুকাদ্দিমাতে বলেন, হাফিজুল হাদিস ইমাম দারা কুতনি রাহ. ও আরো কেউ কেউ মুসলিম শরিফের কিছু হাদিস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। (পৃষ্ঠা -১০) 


ففي صحيح مسلم خاصة ، جملة من الأحاديث ، تكلم عليها بعض العلماء ، بالتضعيف والإعلال ، منهم أبو الحسن الدارقطني ، وأبو علي النيسابوري ، وأبو الفضل بن عمار ، وأبو علي الغساني ، وأبو الحسين العطار ، وأبو مسعود الدشقي وأبو عبد الله الذهبي .

وفي صحيح البخاري بعض ذلك ، إلا أنه قليل جدا ، وقد يسلم هذا القليل أيضا .


মুসলিম শরিফের একক বর্ণনার এমন বেশ কিছু হাদিসের উপরে দইফ হওয়ার এবং দইফ হওয়ার গোপন কিছু ইলাল বর্ণনা করেছেন পরবর্তী হাফিজুল হাদিস বেশ কজন। তাদের মাঝে, ইমাম আবুল হাসান দারাকুতনি, আবু আলি নিশাপুরী, আবুল ফদল ইবনু আম্মার, আবু আলি আল গাসসানি, আবুল হুসাইন আল আত্তার, আবু মাসউদ আদ দামেশকি, এবং সর্বশেষ শায়খ ইবনে তাইমিয়ার ছাত্র ইমাম জাহাবি অন্যতম। তারা প্রত্যেকেই বড় বড় মুহাদ্দিস ইমাম ছিলেন। তাঁরা মুসলিম শরিফের একক বর্ণনার এমন অনেক হাদিস নিয়েই আপত্তি করেছেন।  সনদের দুর্বলতা এবং এমন গোপন ইলাল বা রুগ্নতা বের করেছেন যার কারণে সেগুলো দইফ হতে পারে বলে মত দিয়েছেন। 

انظر : "كتاب الإلزامات والتتبع" لأبي الحسن الدارقطني ، "ميزان الاعتدال" (4/39-40) ، "مقدمة الفتح" (344) ، "شرح مسلم للنووي" (1/27) ، "سلسلة الأحاديث الضعيفة" (1/142) (2/471-475) (5/218) .

قال ابن الصلاح في مقدمة شرح مسلم له :

" ما أخذ عليهما - يعني على البخاري ومسلم - وقدح فيه معتمد من الحفاظ فهو مستثنى مما ذكرناه لعدم الإجماع على تلقيه بالقبول " انتهى .

এই মর্মে বিস্তারিত জানতে ইমাম দারা কুতনির কিতাবুল ইলজামাত ওয়াত তাতাব্বু, মিজানুল ইতিদাল (৪/৩৯-৪০), মুকাদ্দিমাতুল ফাতহ, পৃষ্ঠা ৩৪৪, শরহু মুসলম লিল ইমাম নববী ১/২৭, শায়খ আলবানির সিলসিলাতু আহাদিসি দাইফার ১/১৪২, ২-৪৭১-৪৭৫, ৫/২১৮ দেখতে পারেন।  


কাজেই মুসলিম শরিফে এসেছে বলেই মাথা পেতে মেনে নিতে হবে এমন কোন কথা নেই। মুসলিম শরিফ কুরআন মাজিদ না। অথবা এই হাদিস দুটো অকাট্য বা মুতাওয়াতির না। মুত্তাফাক আলাইহিও না, অর্থ্যাৎ ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম উভয়েই আনেন নাই। একজনের বর্ণনা। আর এগুলো খবরে ওয়াহিদ বা একজন মাত্র রাবির বর্ণনা। আর কোন স্বাক্ষ্য নেই৷ 


আর প্রিয় ভাই ও বোনেরা! হাশরের দিনের জন্য অপেক্ষা করুন। রাসুল ﷺর মা বাবাকে জাহান্নামে পাঠাতে এত উদগ্রীব কেন?  মায়াজাল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহাল আজিম। আল্লাহ পাক আহলে ফাতরাহ বা নবী রাসূলহীন যুগের মানুষদের পরীক্ষা নেবেন হাশরের দিনে। যেমনটি হাদিসে এসেছে "ওয়া মা কুন্না মুয়াজ্জিবিনা হাত্তা নাবয়াসা রাসুলা" "আল্লাহ পাক ততক্ষন কাউকে শাস্তি দেবেন না যতক্ষণ না রাসুল প্রেরণ করেন" (সূরা বনী ইসরাইল বা ইসরা সূরা নং ১৭, আয়াত নং ১৫) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসির,তাফসিরে তাবারিসহ  বহু তাফাসিরের কিতাবে এসেছে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে কে জান্নাতি কে জাহান্নামি। কাজেই হাশরের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন৷ এত তাড়াহুড়ো কেন এত স্পর্শকাতর বিষয়ে? 


আমার এই ভিডিওতে দেখুন বিস্তারিত আলোচনা করেছি আল্লাহর রহমতে এই বিষয়ে। হাদিস দুখানা কুরআন মাজিদের আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক। তাই আমরা মানতে একান্ত বাধ্য নই।  


https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=-Y0m25e_Ww4


ভিডিওর কথাগুলো খুব সংক্ষেপে এখানেও  দিয়ে দিলামঃ


প্রশ্নঃ ইদানীং বেশ কজন ভাই-বোন সৌদি রিয়ালখোর (সৌদির কোন এক শহরে বসে তথাকথিত ইসলামিক সেন্টার থেকে বসে ভিডিও ছাড়েন ও মানুষকে বিভ্রান্ত করেন সৌদি সরকারের রিয়াল খেয়ে, এটাই উনাদের কাজ) একজন মৌলভির একটা ভিডিও আমার সাথে শেয়ার করছেনঃ ঐ মৌলভি মুসলিম শরিফের দুইখানা হাদিস দিয়ে দলিল দিচ্ছেন যে হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺর মা-বাবা জাহান্নামী! নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। এই বিষয়ে আমার মতামত কী?


উত্তরঃ আসলে এক-দুইটা হাদিস পড়েই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয় তারা, এটাই একটা বড় সমস্যা। জঘন্য কথা এগুলো। এই বিষয়ে কুরআন মাজিদের আয়াত ও অন্যান্য হাদিস ঘেটে কথা বলতে হবে। 


একথা মুতাওয়াতির বা অকাট্য যে, হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺর আম্মা ও আব্বাজান ইসলামের দাওয়াত শুরু হওয়ার আগেই ইন্তিকাল করেছেন। প্রকৃতপক্ষে হজরত আব্দুল্লাহ রাঃ তো হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺকে আম্মাজান আমেনার গর্ভে রেখেই ইন্তিকাল করেন৷ আম্মাজান আমিনা রাঃও হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺর বয়স যখন ৬ বছর তখন ইন্তিকাল করেন। আর নবিজি ﷺ তাঁর পরিবারকে সর্বপ্রথম দ্বীনের দাওয়াত দেন ৪০ বছর বয়সে। কাজেই হজরত আব্দুল্লাহ ও মা আমেনার কাছে নবি রাসুলের দাওয়াত পৌঁছে নাই। এর আগে ইসা আলাইহিস সালাম ৫০০ বছর আগে জেরুজালেমে এসেছিলেন। সেই দাওয়াত মক্কা নগরিতে আসে নাই। আর আগের কোন নবি ইউনিভার্সেল বা সার্বজনীন সকল গোত্রের মানুষের জন্য ছিলেন না। হাদিস শরিফে যা স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, কানা ইউবয়াসু ইলা কাউমিন খাস, ওয়া বুইসতু ইলান নাসি কাফফাহ। 

"আগের নবি রাসুলগণ নির্দিষ্ট একটি কওমের জন্য আসতেন, আমি এসেছি সকল মানুষের জন্য আমভাবে!" হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের পর প্রায় ৪০০০ বছর কোন নবী মক্কা নগরীতে অথবা আশেপাশে আসেন নাই। কিন্তু নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার পূর্বপুরুষগণ দ্বীনে ইব্রাহীমির উপরে ছিলেন। যেহেতু আগেই আলোচনা করেছি যে নবীজীর সরাসরি উর্ধবতন পুরুষ কেউ মূর্তিপূজারক হওয়া অসম্ভব।  কাজেই তাঁরা সকলেই একেশ্বরবাদী ছিলেন। সিরাতের কিতাবে এসেছে,  নবীজির দাদা হজরত আব্দুল মুত্তালিব রামাদান মাসে হেরা গুহায় গিয়ে ইবাদাত করতেন। যদি মায়াজাল্লাহ মূর্তপূজারক হতেন তবে হেরা গুহায় কেন যাবেন? যেহেতু কাবা শরিফকে মুশরিকে মক্কা মূর্তি দ্বারা পূর্ণ করে ফেলেছিল সেহেতু তিনি হেরা গুহায় গিয়ে ইবাদাত করে শান্তি পেতেন। আব্রাহা বাদশাহ যখন কাবা শরিফ আক্রমণ করতে এল তখন তিনি বার বার বলেছেন কাবার রব কাবা রক্ষা করবেন। একবারও লাত মানাত উজ্জা হুবলের নাম নেন নাই৷ নবী করিমের ﷺ আম্মা আব্বা মূর্তিপূজা করেছেন অথবা শিরকে লিপ্ত ছিলেন মর্মে কোন বর্ণনা অন্তত আমি পাইনি। আমি দাবি করি না যে আমি সব পড়ে ফেলছি।যদি কেউ পেয়ে থাকেন দেখান প্লিজ। 


আর এদিকে সূরা ইসরা বা বনি ইসরাইল ১৭ নং সুরার ১৫ নং আয়াতে এসেছে,


"কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।"


এর ব্যাখ্যায় সুস্পষ্টভাবে সকল তাফসিরের কিতাবে অসংখ্য হাদিস এসেছে এবং সেসব হাদিসে বলা হয়েছে,  নবি রাসুল আসার আগে আল্লাহ কোন জাতিকে কোন কওমকে শাস্তি দিবেন না। উনাদেরকে "আহলে ফাতরাহ" বলা হয়। যাদের মাঝে নবি রাসূলের দাওয়াত পৌঁছে নাই, নবি রাসুল যাদের কাছে আসেন নাই। উনাদেরকে শাস্তি দিলে আল্লাহ জালিম হয়ে যাবেন। তারা আল্লাহর সাথে এই যুক্তিও দেবেন কাল হাশরের দিনে৷ তাফসিরে ইবনে কাসির, তাবারিসহ যেকোন পুরাতন (সৌদি ওয়াহাবিদের হাতে লিখিত গত ২০০ বছরের মধ্যকার কোন তাফসিরের কিতাব দেখবেন না) তাফসিরের কিতাব দেখতে পারেন। হাদিসও আছে এই মর্মে। 


তো দুনিয়ার অন্য সকল সাধারণ "আহলে ফাতরাহ" দের জন্য কী এক হুকুম আর হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺর আম্মাজান ও আব্বাজানের জন্য কী আরেক হুকুম? নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক।

Comments

Popular posts from this blog

মীলাদুন্নাবী (সা:) ও মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে -বিপক্ষে দলিল ভিত্তিক বইসমূহ Books about mawlid and milaad

 মিলাদের বিপক্ষে ও পক্ষে দলিল ভিত্তিক বই সমূহ Books about mawlid and meelad আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভাল আছ।আমরা অনেকে একটা বিষয়ে অনেক কিছু বলি। এটা নিয়ে অনেক কিতাব,ওয়াজ ও বাহাস হয়েছে। সে বিষয়টি হল মিলাদুন্নবী ও মিলাদ-কেয়াম।আমরা অনেকে এটার পক্ষে, অনেকে এটার বিপক্ষে। সেই বিষয়ে  আমরা অনেকে বলি এটি বিদাত।এই বিষয়ে কিছু কিতাবের pdf দেয়া হল মিলাদের পক্ষে : ১.মিলাদুন্নবী ও মিলাদ মাহফিল (নাইমুল ইহসান বারাকাতি,Barakati publication) Download ২.কুরআন হাদিসের আলোকে মিলাদ-কিয়ামের অকাট্য দলিল(মুস্তফা হামিদি,ছারছীনা) http://www.mediafire.com/file/ntw372p7138k142/ ৩.বসন্তের প্রভাত (আমিরে আহলেসুন্নাত, ইলিয়াস আত্তার কাদেরি,মাকতাবাতুল মদীনা) Download ৪.সিরাজুম মুনিরা(আমিমুল ইহসান রাহ:) download ৫.মৌলুদের মাহফিল ও কিয়াম(আলভী আল মালেকি আল মাক্কি রাহ:) download ৬.বারাহিনুল কাতিয়া ফি আমালিল মাওলিদ(কারামত আলী জৈনপুরী [রাহঃ] ৭. মু মুলাখখাছ-মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি download ৮.হাকীকতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী https://drive.google.com/fil

কাশফুল মাহযুব Kashful mahzub pdf

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কাশফুল মাহযুব হল হযরত দাতা বখশ হাজভেরী রহঃ এর অন্যতম গ্রন্থ । এর বাংলা হল মারেফতের মর্মকথা । বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে রশিদ বুক হাউজ । মূল বইটি ফারসি ভাষায় লিখিত । download this book in bangla : kashful mahzoob in bangla Kashful mahzoob is a book which is written by data ali hazveri rh.  Kashful Mahjoob  was originally written in Persian language by Hazrat Daata Ganj Bakhsh Ali Hajveri but then translated into many other languages as well including Urdu. Complete name of Hazrat Daata Sahab is ‘Abul Hassan Ali Ibn Usman al-Jullabi al-Hajveri al-Ghaznawi’. The book is a master piece in Islamic Sufi genre. Daata Ali Hajveri has written many books but this book has become a symbol in Sufi books. A famous saying about this book is ‘if you want to find a true murshad (spiritual guider) for you then read this book and you will definitely find one’. Download in english   https://ia601901.us.archive.org/21/items/KashfulMahjoobEn/KashfulMahjoob-en.pdf

Books of Shaykh abdul qadir gilani(rah;) বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রাহ:) এর কিতাব /বই ডাউনলোড করুন

Download in urdu               Books of Shaykh abdul qadir gilani (rah;)               শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) এর কিতাব                        বড়পীর শায়েখ আব্দুল কাদির জিলানী(রাহঃ) আল্লাহর বড় ওলি ছিলেন । তিনি                                         শরীয়ত,তরিকত,মারেফত,  তাসাউফ ও তাযকিয়া বিষয়ে অনেক কিতাব লিখেছেন । সেসব কিতাবসমূহের বাংলা ,ইংরেজী,আরবী ও উর্দু       অনুবাদের pdf নিচে দেয়া হল  ১.সিররুল আসরার Sirr ul asrar In Bangla      Download 1   in English  http://data.nur.nu/Kutub/English/Jilani_Sirr-al-Asrar-1---5.pdf in urdu    https://ia801309.us.archive.org/27/items/sirr-ul-asrar/sirr-ul-asrar.pdf ২.গুনিয়াতুত তালেবীন             download in bangla         in english                                 In urdu               In arabic                                                                           ৩.ফতহুল গায়ব FUTUH AL GHAIB Download in english                in urdu ৪.আল ফাতহুর রব্বানি Fathur rabbani