Skip to main content

প্রসঙ্গ: ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতি

 

ইয়েমেন বিশ্বের অন্যতম মুসলিম দেশ। গত কয়েকবছর ধরে এই দেশটা বিভিন্নকারনে আলোচনায় এসেছে। বিশেষত ইয়েমেনে যুদ্ধ, সংকট,হুথি শিয়া ও দক্ষিনাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উত্থান ইত্যাদি বিষয় মিডিয়া সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে অনেকেই ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়ে বিভ্রান্তির শিকার। বাংলাদেশের অনেক সংবাদপত্রে ইয়েমেন ইস্যুতে অনেক সময় ইহুদিবাদী জায়োনিস্ট সেকুলার ও ইরানী শিয়া সমর্থিত মিডিয়া গণমাধ্যমগুলোর সংবাদকে ফলাও প্রচার করে। এতে অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে ও অনেকে শিয়া হুথিদেরকে না জেনে বুঝেই সমর্থন দেয়া শুরু করেছে। যা খুবই দুঃখজনক। তাই ইয়েমেন প্রসঙ্গে এই প্রবন্ধ লেখা হল।

ইয়েমেন । বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মুসলিম দেশ ।ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা দেশ ।যে দেশের ব্যাপারে মহানবী মুহাম্মদ সা এর দোয়া এসেছে । এই ইয়েমেনে অসংখ্য মুসলিম মনীষীর জন্ম হয়েছিল। সিরিয়ার উত্তর আফ্রিকা স্পেন জয়ের অভিযানে তাদের বৃহত্তম অবদান ছিল । ইয়েমেনি জাতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য তারা সুহৃদ ও বিনয়ী জাতি । ইলম জ্ঞান বিজ্ঞানের অঙ্গনে ইয়েমেন সোনালী অবদানে রেখেছিল । নবীজি সাঃ ও খোলাফায়ে রাশেদিনের সময় থেকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে মুসলিম উম্মাহর নিকট ইয়েমেন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে । সান'আ হচ্ছে ইয়েমেনের রাজধানী ও এডেন হল সেদেশের বন্দর নগরী। সান'আ ও সাদাহতে যায়েদী ও এডেনে সুন্নি আহলে সুন্নাত মুসলিমদের বসবাস বেশি ।তবে সা'নাতে সুন্নি ও যায়দিদের সমান বসবাস আছে। জাইদিরা মূলত যায়েদ ইবনে আলী রাঃ এর অনুসারী। যদিও তারা শিয়া মতবাদের ব্যানারে পরিচিত হলেও কিন্তু সুন্নিদের সাথে তাদের সম্পর্ক অধিক ঘনিষ্ঠ । এরা ১২ ইমামী শিয়াদের ভ্রান্ত মতাদর্শের সংক্রমণ থেকে মুক্ত ছিল। ইমাম কাজী আল্লামা শাওকানী সহ এমন অনেক জায়েদী মনীষীদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ইয়েমেনে রয়েছে।ইয়েমেনে ৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইয়াহিয়া ইবনে রাসসি যায়দি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । এই জায়েদীয়া ইমামত শাসন সাম্রাজ্য ২৮৪ হিজরী/৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৩৮২ হিজরী বা ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ছিল। ইয়েমেনে যায়েদী ইমামত সাম্রাজ্যের শেষ ইমাম ছিলেন মুহাম্মদ আল বদর। এর মাঝখানে ইয়েমেনে উসমানিয়া সালতানাত খিলাফত ও ব্রিটিশ শাসন ছিল । উল্লেখ্য সা'না ছিল ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে ও এডেন ছিল দক্ষিণাঞ্চলে।


১৯৬২ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে ইয়েমেনি বিপ্লব শুরু হয় ও ইমামি সাম্রাজ্যের অবসান হয়। তার এক বছর পরে ১৯৬৩ সালের ১৪ই অক্টোবর এডেনসহ দক্ষিণ ইয়েমেনে ব্রিটিশ শাসনামল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়। ১৯৬৭ সালে দক্ষিণ ইয়েমেন ব্রিটিশ সৈন্যমুক্ত হয় । ১৯৬৭ সালের ৩০ নভেম্বর ইয়েমেন স্বাধীনতা লাভ কর । কিন্তু হঠাৎ ইয়েমেন দ্বিখন্ডিত হয় উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেন উত্তর ইয়েমেনের নাম হয় ইয়েমেন আরব প্রজাতন্ত্র আর দক্ষিণ ইয়েমেনের নাম হয় গণতান্ত্রিক ইয়েমেন প্রজাতন্ত্র। উত্তর ইয়েমেন রাষ্ট্র ইসলাম ধর্মের ভাবাদর্শে চলতো আর দক্ষিণ ইয়েমেন রাষ্ট্র বামপন্থী কমিউনিস্ট সমাজতান্ত্রিক ভাব আদর্শে চলত । উত্তর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট ছিল আলী আব্দুল্লাহ সালেহ ও দক্ষিণ ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট ছিল আলী সালিম আল বাঈদ। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় দক্ষিণ ইয়েমেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ও ১৯৭৫ সালের দিকে উত্তর ইয়েমেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় । ১৯৯০ সালের ২২ শে মে ২ ইয়েমেন এক হয়ে যায় রিপাবলিক অফ ইয়েমেন যার রাজধানী হয় সা'না । সেসময় ইয়েমেন এক হয়ে যাওয়ার পর আলী আব্দুল্লাহ সালেহ ইয়েমেনের প্রথম প্রেসিডেন্ট হন ও আলী সালিম আলবাঈদ ভাইস প্রেসিডেন্ট হন পরে । ১৯৯৪ সালে আব্দুরাব্বুহ মানসুর আল হাদি ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।

দুই ইয়েমেন এক হওয়ার পরে ইয়েমেনে রাজনীতির পথ উন্মুক্ত হয়। তখন জিপিসি(পিপলস কংগ্রেস),ইসলাহ পার্টি,নাসেরবাদী দল,ইশতিরাকি(সমাজতন্ত্রি),হিযবুল হক সহ অনেক দল ইয়েমেনে রাজনীতি শুরু করে। এর মধ্যে জিপিসি সরকার প্রভাবিত দল,ইসলাহ ছিল সুন্নি মুসলিমদের রাজনৈতিক প্লাটফর্ম, হিযবুল হক ছিল যায়েদী পন্থী আর আনসারুল্লাহ ছিল শিয়া হুথিদের রাজনৈতিক দল। ১৯৮০ এর দশকে বদরুদ্দিন হুথি এবং তার ছেলে হুসেইন বিন বদরুদ্দিন আল হুথি ও আব্দুল মালিক হুথি এই হুথি শিয়া মতাদর্শ শুরু করেন। বদরুদ্দীন হুথি একজন যায়েদী শিয়া আলেম ছিল তবে তিনি জারুদিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারী ছিলেন। যায়েদীদের মধ্যে কয়েকটা উপদল সম্প্রদায় আছে যেমন বাতরিয়া,সুলাইমানিয়া,তাফজিলীয়া,জারুদীয়া ইত্যাদি। এদের মধ্যে জারুদিয়া সম্প্রদায় হল ১২ ইমামী শিয়াদের কাছাকাছি অবস্থানকারী সম্প্রদায়। ইয়েমেনের যায়েদীদের অন্যতম রাজনৈতিক দল হিযবুল হকের সদস্য ছিলেন বদরুদ্দীন হুথি। কিন্তু সেই দলের অন্যতম নেতা যায়েদী আলেম শায়খ মাজদুদ্দিন এর সাথে বদরুদ্দিনের মতবিরোধ বিবাদ শুরু হয়,বদরুদ্দিন হুথি ইরানী শিয়াদের সমর্থন করেন। যেকারণে বদরুদ্দীন হুথি ইয়েমেনের মূলধারার যায়েদী সম্প্রদায়ের আলেম উলামাদের বিরোধিতা করেন ও ৯০ এর দশকে বদরুদ্দিন হুথি ও তার ছেলেরা হিযবুল হক ছেড়ে আশ শাবাবুল মুমিনীন নামক নতুন দল গঠন করে। সেখান থেকেই হুথি শিয়াদের উৎপত্তি হয়েছে।

২০১১ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ মধ্যপ্রাচ্যে আরব বসন্ত আন্দোলন শুরু হয় যা প্রথমে মিশর,তিউনিসিয়া,সিরিয়া ও লিবিয়া থেকে শুরু হয়েছিল। যার প্রভাব ইয়েমেনে এসে পড়ে। শুরু হয় প্রেসিডেন্ট সালেহ এর পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন। মিশরের হোসনী মোবারক,লিবিয়ার গাদ্দাফী ও সিরিয়ার বাশার আল আসাদ এই তিন শাসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আসে। যেকারণে এসব দেশের বিতর্কিত শাসকদের পদত্যাগ/পতন/ক্ষমতাচ্যুত করার দাবীতে আন্দোলন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ইয়েমেনে আলী আব্দুল্লাহ সালেহকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন হয় হাজার হাজার লোকজন আন্দোলনে শরীক হয়। ইয়েমেনের রাষ্ট্রায়ত্ত /সরকার প্রভাবিত সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যম (যেমন আল ছাওরা,14 অক্টোবর,আল জুমহুরিয়া,সাবা এজেন্সি),রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও ও টিভি চ্যানেল যেমন ইয়েমেন টিভি,এডেন টিভি,সাবা টিভি (قناة اليمن ،قناة عدن ،قناة سبأ Yemen Tv) তে সালেহের পক্ষে প্রচারণা প্রপাগাণ্ডা চলে। ইয়েমেনের ইসলাহ পার্টির শায়খ জিন্দানী সালেহকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে আন্দোলন চালাতে থাকে ।সেসময় হুথি শিয়া ও দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও সালেহ বিরোধী আন্দোলন তাদের মত করে চালিয়ে রাখে । এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট সালেহের পক্ষে বিপক্ষে আন্দোলনকারী দুই পক্ষের মধ্যে মারধর হামলা হয়েছিল। এর মধ্যে আব্দুল্লাহ সালেহ দেশ ত্যাগ করে সৌদি আরবে চলে যান । সে সময় ইয়েমেনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন মানসুর হাদি। পরে ২০১২ সালে দূর্নীতিসহ কতিপয় কারণে সালেহকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মনসুর হাদী ইয়েমেনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হন। সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহ ছিলেন জাইদী শিয়া ও মনসুর হাদিস ছিলেন সুন্নি মুসলিম। মনসুর হাদী ক্ষমতায় এসে নতুন করে সরকার ঢেলে সাজান। মনসুর হাদি ক্ষমতায় থাকাকালীন হঠাৎ সেদেশের দাম্মাজে নতুন সমস্যা শুরু হয়। ২০১১-১৩ এর মাঝামাঝি সময়ে হুথি শিয়াদের সাথে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী এবং সেখানকার স্থানীয সালাফিদের ত্রিমুখী যুদ্ধ শুরু হয় সে সময় শায়েখ মুকবিল বিন হাদীর দারুল হাদিস সহ এ জাতীয় সমমনা মসজিদ-মাদ্রাসা ও প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় শিয়া হুথিরা।

২০১৩-১৪ এর মাঝামাঝি সময় প্রেসিডেন্ট হাদি ইয়েমেনের সব রাজনৈতিক দল পক্ষ গুলোর মাঝে আনুষ্ঠানিক সংলাপ আলোচনা শুরু করেন কিন্তু এই সংলাপ শেষ হওয়ার কয়েক মাস পর হঠাৎ ২০১৪ সালে ইয়েমেনের সা'দাহ শহর হুথিদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ।সেবছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে হঠাৎ জ্বালানি ভর্তুকি অপসারণের জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে হুথি শিয়ারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। তখন সামরিক বাহিনীর মধ্যে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহের অনুগত লোকজন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদির বিরোধীতা করে । হুথিদের আন্দোলন রাজধানী সান'আ পর্যন্ত পৌঁছায় এবং সেখানে হুথিরা প্রভাব বিস্তার শুরু করে । তখন ইয়েমেনে প্রেসিডেন্ট হাদি অনুগত সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে হুথি শিয়া দের সংঘর্ষ হয় ও পরে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সামরিক বাহিনীতে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহ অনুগত সদস্য ও হুথি শিয়ারা রাজধানী সান'আ দখল করে যাকে তারা ২১ সেপ্টেম্বর বিপ্লব হিসেবে আখ্যায়িত করে। এতে ইয়েমেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাদি উদ্বিগ্ন হন । ইয়েমেনে নতুন সংকট শুরু হয়। ২১ সেপ্টেম্বর এর পরের দিন ২২ তারিখ সান'আয় সরকার,হুথি শিয়াদের সাথে ইয়েমেনের সরকার সমর্থক ও সেনাবাহিনীসহ সুন্নি মুসলমানদের হামলা সংঘর্ষ হয় এতে ৩৪০ জন মানুষ নিহত হয়। সেদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ বাসিন্দাওয়া পদত্যাগ করেন ও জিন্দানীর ইসলাহ পার্টি সমর্থিত আব্দুল্লাহ মুহসিন আকওয়া মাত্র ৪৬ দিন ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী হন। তখন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হাদি সংকট নিরসনে নতুন সরকার গঠন ও ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। নভেম্বর ২০১৪ তে সংকট নিরসনে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হাদির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন করে। ০৯ নভেম্বর ২০১৪ তে খালেদ বাহা ইয়েমেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন। শায়খ জিন্দানী ও তার দল ইয়েমেন ইসলাহ পার্টি হুথি শিয়াদের বিরোধিতা শুরু করে ও প্রেসিডেন্ট হাদিকে সমর্থন করে।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে হুতি শিয়া ও সালেহপন্থী দের সাথে ইয়েমেন প্রেসিডেন্সিয়াল ফোর্স গার্ড ও সামরিক বাহিনীর পাল্টা আক্রমণ সংঘর্ষ শুরু হয় ও তখন হুথিরা প্রেসিডেন্ট হাউস ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘিরে ফেলে । হুথিরা প্রেসিডেন্ট ভবন দখলের চেষ্টা করে। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি হুথি শিয়ারা ইয়েমেনের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল স্টেশন সমূহ দখল করে সেগুলোর সম্প্রচার কার্যক্রম তাদের হাতে চলে যায় ও এবং ইয়েমেনের দুইটা রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল দ্বিখন্ডিত করে যার একটা ভাগ মনসুর হাদি সরকারের হাতে চলে যায় অপর ভাগ শিয়া হুথিদের দখলে চলে যায়। ইয়েমেনের আল ছাওরা,সাবা এজেন্সি সহ অনেক সংবাদপত্র ও রেডিও স্টেশন হুথি শিয়ারা দখল করে পরে আল ছাওরা ও সাবা এজেন্সি সহ অনেক সংবাদপত্র দ্বিখণ্ডিত হয়। ইরানের বর্তমান শিয়া শাসক গোষ্ঠী,লেবাননের অন্যতম শিয়া মিলিশিয়া দল হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার বিতর্কিত শাসক বাশার আল আসাদ সরকার, ইরাকের হরকাত আল নুজবা,কাতা'য়িব হেজবুল্লাহ,আসা'য়িব আহলুল হক,আল হাশদ শা'বী(পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স) সহ অনেক ইরান ভিত্তিক শিয়া মিলিশিয়া দলগুলো হুথি শিয়াদেরকে সমর্থন করে। ২২ জানুয়ারি ২০১৫ তে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি ও প্রধানমন্ত্রী খালেদ বাহা পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে পদত্যাগ করেন ও প্রেসিডেন্ট হাদিকে গৃহবন্দী করে হুথিরা। খালেদ বাহা ঘোষণা করেছেন যে তিনি "কোন আইনের ভিত্তিতে অ-গঠনমূলক নীতির অতল গহ্বরে টেনে আনা এড়াতে" পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে,দক্ষিণাঞ্চলের এডেন এবং অন্যান্য দক্ষিণ শহরগুলির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছেন যে তারা আর রাজধানী সানা'আ থেকে কোন আদেশ গ্রহণ করবেন না, কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে তারা একটি স্বাধীন দক্ষিণ চাইবে। ২৩ জানুয়ারী হুথি আগ্রাসন অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এডেন, আল হুদায়দাহ, ইব্ব এবং তা'য়িজ সহ অন্যান্য শহরগুলিতে হাজার হাজার জনগণ প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিল। তবে রাজধানী সানায় হুথিদের সমর্থনে কয়েক হাজার লোকজন বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভ করেছে। তারা সবুজ পতাকা ও ব্যানার সহকারে হুথি শিয়াদের স্লোগান উচ্চারিত করে। অনেক সুন্নী ও সুফিরা হুথি শিয়াদেরকে সমর্থন দেয়া শুরু করে। ইয়েমেনের অনেক অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও জেলখানা কারাগার হুথিদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।


হাদি অনুগত বাহিনীর সহায়তায় এগিয়ে আসে। উভয় পক্ষই যার যার অবস্থানে থাকে। এডেনে হুথি শিয়ারা আগ্রাসন শুরু করে। 


⚫২৯ ও ৩১ মার্চ ২০১৫- হুথি ও সুন্নি উপজাতিদের মধ্যে লড়াইয়ে ৩৮ জন নিহত হয়। হুথি মিলিশিয়ারা বাব এল মান্দেব প্রণালীর নিকটে সামরিক ঘাঁটি দখল করে। তারা পেরিম নামক দ্বীপে ব্যাপক ভারী অস্ত্র ও দ্রুতগামী নৌকা মোতায়েন করে। ⚫এপ্রিল- জুন ২০১৫ - ১ এপ্রিল দালি'তে আরব জোটের বিমান হামলায় একটি হুথি ব্রিগেড তছনছ হয়ে যায়। তারা উত্তরাঞ্চলের দিকে পালিয়ে যায়। পরেরদিন প্রেসিডেন্ট হাদি’র অস্থায়ী বাসভবন হুথিরা দখল করে নেয়। মর্টার হামলা চালিয়ে ২ এপ্রিল থেকে আল কায়েদা একিউ দক্ষিণাঞ্চলে হাদরামাউতের আল মুকাল্লাসহ অনেক এলাকা ও হাদরামাউতের আশপাশে দক্ষিণের অনেক এলাকা এর দখলে নিয়ন্ত্রণ নেয়। ৩ এপ্রিল স্থানীয় উপজাতিরা হাদি বাহিনীর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে মুকাল্লায় প্রবেশ করে এবং আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শহরের কিছু অংশ উদ্ধার করে। শহরের অপর প্রান্তে আল-কায়েদা যোদ্ধারা সৌদি আরবের একটি সীমান্ত চৌকিতে হামলা করে ২ সৌদি সৈনিককে হত্যা করে তা দখল করে নেয়।১৩ এপ্রিলে সাউদার্ন মিলিশিয়ারা বালাহাফের নিকটবর্তী হুথিদের ঘাঁটি দখল করে। এপ্রিলের শেষ নাগাদ আমিরাত ও হাদির অনুগত সৈন্যরা প্রায় ৮০০ আল কায়েদা যোদ্ধাকে হত্যা করে মুকল্লা পুনরুদ্ধার করে। রমজান মাস শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে ১২ জুন মুকাল্লায় এক আল কায়েদা নেতা মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। ⚫জুলাই- ডিসেম্বর ২০১৫ - হুথি শিয়াদের সাথে সংঘটিত যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে হঠাৎ রমজান মাসে অন্যরকম অবস্থা দেখা যায়। সৌদি আরবে বিশেষত মক্কা ও মদিনা,আরব আমিরাত,কুয়েত ও কাতারের অধিকাংশ মসজিদগুলোতে তারাবীর নামাজে হুথিদের আগ্রাসন থেকে ইয়েমেন মুক্ত করার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে ২১ জুলাইয়ে কয়েক মাস যুদ্ধের পর হাদি বাহিনী সৌদি আরবের সহায়তায় এডেন পুনরুদ্ধার করে। এর ফলে, প্রথম ইয়েমেনে ত্রাণ পৌছানোর সুযোগ তৈরি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আরব আমিরাতের একটি প্রযুক্তি দল হাজির হয় এবং দ্রুত বিমানবন্দর মেরামত করে।২২ জুলাইয়ে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে সৌদি সামরিক বিমান এডেন বিমানবন্দরে অবতরণ করে। একই দিনে আরব আমিরাত থেকে একটি জাহাজ ভর্তি চিকিত্সা সহায়তা পৌছায়। ২৪ জুলাই আরব আমিরাতের সামরিক বিমানে করে ত্রাণ পৌছায়। ৪ আগস্ট প্রেসিডেন্ট হাদিপন্থী বাহিনী আল-আনাদ বিমানঘাঁটি থেকে হুথি বাহিনীকে পুশ ব্যাক করে। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫-এ একটি হুথি ক্ষেপণাস্ত্র মারিবের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করে এতে ৪৫ আমিরাতি,১০ সৌদি এবং ৫ বাহরাইনি সেনা নিহত হয়। দক্ষিনে জিঞ্জিবার অঞ্চল ২ ডিসেম্বর একিউ পুনরায় দখল করে। ১৪ ডিসেম্বর এ, সালেহপন্থী সেনা এবং হুথি শিয়ারা তাইজ শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে সামরিক ক্যাম্পের বিরুদ্ধে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
২০১৫ সালে যখন ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরু হয় তখন এই যুদ্ধে চার পক্ষ ছিল ১.কেবিনেট অফ ইয়েমেন বা প্রেসিডেন্ট হাদি প্রশাসন সরকার ২.হুথি শিয়া প্রশাসন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ সালেহ সমর্থক বাহিনী ৩. জঙ্গি সন্ত্রাসী দল আইএস ৪. আল কায়েদা একিউ। সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ সালেহ কখনো হুথিদের সমর্থন করেছেন আবার কখনো হুথিদের বিরোধিতা করেছেন। ২০১৬-১৭ সালের ইয়েমেনের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হল। ⚫ জানুয়ারি -মার্চ ২০১৬ - জানুয়ারিতে এডেনে একটি নতুন সংঘাত শুরু হয়, যেখানে আইএস আইএস(ISIS) বা দায়েশ সন্ত্রাসীরা এবং একিউ আল কায়েদা শহরের আশেপাশের এলাকাগুলো দখল করে। ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হাদির অনুগতরা মিদি জেলার কৌশলগত বন্দর দখল করে, কিন্তু হুথি প্রশাসন সমর্থিত বিদ্রোহীরা শহর এবং এর আশেপাশে আক্রমণ চালিয়ে যায়। ৩১ জানুয়ারীতে আল আনাদ এয়ার বেস ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ ঘটে। যেখানে হুথি শিয়ারা একটা মিসাইল আক্রমণ চালায় এতে ২০০ জন হুথিবিরোধী সৈনিক নিহত হন ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত, হাদিপন্থী বাহিনী নিহম জেলা দখল করে কয়েক ডজন হুথি যোদ্ধাকে হত্যা করে সা'না প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখে, কিছু শহর ও গ্রাম দখল করে।২২ ফেব্রুয়ারিতে আবিয়ানে হাদি সরকার-হুথি শিয়া ও আল কায়েদা একিউ ত্রিমুখী সংঘাত শুরু হয়। ২৫ মার্চ এডেনে আইএস আইএল (ISIS/ISIL) সন্ত্রাসীরা এডেনে গাড়িতে জঙ্গি সন্ত্রাসী হামলা করে যেখানে বোমার আঘাতে ২৭ জন মানুষ যার মধ্যে ১৭ জন সামরিক কর্মকর্তা তারা নিহত হয়। মার্চ,এপ্রিল মে ও জুন মাসেও ইয়েমেনের অনেক এলাকায় বিশেষত এডেন ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় আইএস সন্ত্রাসীরা জঙ্গি সন্ত্রাসী হামলা চালায়,এসব এলাকায় আইএস সন্ত্রাসী ও আল কায়েদার সাথে প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি প্রশাসন অনুগত বাহিনীর যুদ্ধ হয়। ⚫ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে হুথি শিয়ারা এবং সালেহপন্থীরা তাদের ২০১৫ সালের বিপ্লব কমিটি বাতিল করে সুপ্রিম পলিটিকাল কাউন্সিল বা মাজলিসুল সিয়াসিল আ'লা (المجلس السياسي الأعلى) নামে নতুন সরকার প্রশাসন গঠন করে।ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিনের কিছু এলাকা সেই সরকারের অধীনে চলে যায়,ইরানের বর্তমান শাসক গোষ্ঠী,সিরিয়ার আসাদ সরকার এদেরকে স্বীকৃতি সমর্থন দেয় । যেখানে প্রেসিডেন্ট হাদির সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা,হুথি নেতা সালেহ সাম্মাদ কে হুথিরা নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে। সালেহ সাম্মাদ সেই সরকারের নতুন প্রেসিডেন্ট হন ও জিপিসি নেতা আব্দুল আজিজ হাবতুর সেই সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন। অপরদিকে হুথিবিরোধী কেবিনেট অফ ইয়েমেন প্রশাসন (প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি) একে অবৈধ বলে ঘোষণা দেন। ⚫ ২০ আগস্ট ২০১৬ হুথি নিয়ন্ত্রিত সান'আয় সাবিয়ীন স্কয়ারে হুথি শিয়া প্রশাসন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহের পক্ষে সমাবেশ হয়। ⚫ ২-৩ ডিসেম্বর ২০১৬ জিঞ্জিবার এবং জায়ার শহরগুলি আল-কায়েদার হাতে চলে যায়। ১০ ও ১৮ ডিসেম্বর এডেনে আই এস বা দায়েশ সন্ত্রাসীরা এডেনে বোমা হামলা চালায় যাতে ১০২ জন মানুষ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তে ফের তা'ইজে হুথি শিয়ারা আগ্রাসী হামলা চালায় এতে ইয়েমেনের ৫৩ ও সৌদি আরবের ২৩ সৈনিক নিহত হয়।

⚫জানুয়ারি - মার্চ ২০১৭ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা আলকায়েদার ঘাটিতে হামলা চালায় ও শত শত আল কায়েদার লোককে মেরে ফেলে। ২৫ মার্চে হুথি শিয়া নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানায় একটা হুথি সমর্থিত আদালতে প্রেসিডেন্ট হাদি এবং অন্য ছয় সরকারি কর্মকর্তাকে "উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতার" অপবাদে তাদের অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড এর রায় দেয়। হুথি নিয়ন্ত্রিত সাবা নিউজ এজেন্সি এই আজব শাস্তি ঘোষণা করেছে। ⚫এপ্রিল-অক্টোবর ২০১৭ - মে মাসে ইয়েমেনে আইএসের সন্ত্রাসীরা তাদের প্রোপাগাণ্ডা ভিডিও প্রচার করে। ২২ জুলাই হুথিরা পার্শ্ববর্তী দেশ সৌদি আরবকে টার্গেট করে মিসাইল উৎক্ষেপণ করে হামলা চালায়। ২৭ জুলাই হুথিরা আরেকটা মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল যেটার উদ্দেশ্য ছিল মক্কা মুকাররমায় আঘাত করার মত ন্যাক্কারজনক কাজ। ১৬ অক্টোবর আল বায়দায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইএসের সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়।

⚫ নভেম্বরের শেষ দিকে ও ২ ডিসেম্বর ২০১৭ তে সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ হুথিদের সাথে সম্পর্ক বাতিলের ঘোষণা দেয় ও ইয়েমেনের জনগণকে হুথি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালানোর জন্য আহবান জানায়। ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ৬ দিন সান'আয় হুথি ও সালেহ পন্থীদের মাঝে যুদ্ধ শুরু হয়। এতে সানায় হুথিবিরোধী আন্দোলন চলে। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর ২০১৭ তে হুথি শিয়ারা সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহকে হত্যা করে। এতে সালেহ শহীদ হন। হুথিদের অধীনে যায় রাজধানীর সান'আ। অন্যতম মসজিদ আল সালেহ মসজিদ হুথিদের দখলে চলে যায় ও মসজিদের নাম পাল্টিয়ে ফেলে। সালেহের দল জিপিসি তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে একভাগ হুথিদের হাতে চলে যায়। ২০১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ইয়েমেনের দক্ষিনাঞ্চলে হঠাৎ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উত্থান হয়। এডেনের তৎকালীন গভর্নর আইদারুস জুবাইদি ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হাদির আনুগত্য থেকে সরে এসে সাউদার্ন মুভমেন্ট বা দক্ষিণ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলনের প্রতি আনুগত্যের কারণে প্রেসিডেন্ট হাদি আইদারুস জুবাইদিকে বরখাস্ত করেন। জুবাইদির নেতৃত্বে এডেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ৩ মে ২০১৭ তে বড়ধরনের সমাবেশ হয়। পরে তারা সাউদার্ন ট্রাঞ্জিশনাল কাউন্সিল STC বা মাজলিসুল ইন্তিকালিল জুনুবী গঠন করে যাকে প্রেসিডেন্ট হাদি অবৈধ বলে প্রত্যাখান করেন। এসটিসির প্রতিনিধিত্বকারী দক্ষিণের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হুথিদের বিরুদ্ধে হাদি সরকারকে সমর্থন করছিল, কিন্তু ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে উত্তেজনা শুরু হয়। মনসুর হাদির মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে ২৮ জানুয়ারী ২০১৮ এ এডেনে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। প্রো-STC বাহিনী হাদি সরকারের সদর দফতর সহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিস দখল করে। 30 জানুয়ারী নাগাদ, STC শহরের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

তখন থেকে ২০২০ পর্যন্ত ইয়েমেনের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হল ⚫ ২৬ মার্চ ২০১৮, হুথিরা সৌদি আরবে রকেটের একটি ব্যারেজ হামলা চালায়, রিয়াদে একজন মিশরীয় ব্যক্তিকে নিহত এবং আরও দুইজনকে আহত করে। এর জবাবে ২ এপ্রিল হোদাইদায় সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট হামলা চালায়। ⚫ ১৯ এপ্রিল আবিয়ানে আল কায়েদার দুই নেতা ইয়েমেনি ফোর্সের আক্রমণে মারা যায়। একই দিন হুথি প্রশাসনের প্রেসিডেন্ট সালেহ সাম্মাদ হোদাইদায় এক মিসাইলের আক্রমনে নিহত হয়ে মারা যান। পরে হুথি শিয়ারা ইয়েমেনে বিশেষত উত্তরাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে যা মনসুর হাদি প্রশাসন প্রত্যাখ্যান করে। সান'আয় সালেহ সাম্মাদের জানাযা হয় যেখানে হাজার হাজার হুথি শিয়া ও তাদের সমর্থকরা যোগ দেয় ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ব্যান্ডপার্টি (বাদক দল) সহকারে শেষ শ্রদ্ধা জানায়। সেখানে হুথি শিয়াদের স্লোগান ও বাদক দল/ব্যান্ডপার্টি দ্বারা জাতীয় সংগীত এর বাজনা বাজিয়ে সাম্মাদকে শেষ বিদায় জানানো হয়। (সোর্স : আল-জাজিরা,হুথি শিয়াদের মুখপাত্র আল মাসিরাহ টিভি,ইরান ও ইরাকের শিয়াসমর্থিত গণমাধ্যম)। পরে মাহদি মাশাত ইয়েমেনের হুথি প্রশাসনের নতুন রাষ্ট্রপতি হন।

⚫ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তে হোদায়দায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। ⚫২৩ জুন ২০১৯ হুথি শিয়ারা আবহা বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালায় একজন নিহত হয়। ⚫ ১২ আগস্ট ২০১৯ আমিরাত সমর্থিত সাউদার্ন ট্রাঞ্জিশনাল কাউন্সিল বাহিনী ও সিকিউরিটি বেল্ট ফোর্স এর যোদ্ধারা এডেনে নিয়ন্ত্রণ নেয়। প্রেসিডেন্ট হাদি প্রশাসনের সাথে লড়াই যুদ্ধ হয়। এতে এসটিসির অনেকেই নিহত হয়। ⚫ ২৯ আগস্ট ২০১৯ ইয়েমেনের মনসুর হাদি প্রশাসন এডেনে হামলার জন্য আমিরাতকে দায়ী করে। ⚫ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ হুথি শিয়ারা সৌদি আরবের দিকে ড্রোন হামলা চালায়। ⚫ ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ওমান ইয়েমেন ইস্যুতে মধ্যস্থতা শুরু করে। ⚫ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ হুথি শিয়ারা এডেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেনাদের কুচকাওয়াজে মিসাইল হামলা চালায়। ⚫১৮ জানুয়ারি ২০২০ মারিবে হুথি শিয়ারা হামলা আক্রমণ চালায় এতে ১১১ জন নিহত হয়। ⚫ ১০ মার্চ ২০২০ মারিবের সিরওয়া এলাকা হুথিদের দখলে যায়। ⚫ করোনাভাইরাস এর কারণে জাতিসংঘের অনুরোধে ইয়েমেনে এপ্রিল ২০২০ এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। ⚫ ২৬ এপ্রিল ২০২০ এসটিসি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষত এডেনে তাদের পৃথক স্বায়ত্তশাসন ঘোষণা করে।

Comments

Popular posts from this blog

মীলাদুন্নাবী (সা:) ও মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে -বিপক্ষে দলিল ভিত্তিক বইসমূহ Books about mawlid and milaad

 মিলাদের বিপক্ষে ও পক্ষে দলিল ভিত্তিক বই সমূহ Books about mawlid and meelad আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভাল আছ।আমরা অনেকে একটা বিষয়ে অনেক কিছু বলি। এটা নিয়ে অনেক কিতাব,ওয়াজ ও বাহাস হয়েছে। সে বিষয়টি হল মিলাদুন্নবী ও মিলাদ-কেয়াম।আমরা অনেকে এটার পক্ষে, অনেকে এটার বিপক্ষে। সেই বিষয়ে  আমরা অনেকে বলি এটি বিদাত।এই বিষয়ে কিছু কিতাবের pdf দেয়া হল মিলাদের পক্ষে : ১.মিলাদুন্নবী ও মিলাদ মাহফিল (নাইমুল ইহসান বারাকাতি,Barakati publication) Download ২.কুরআন হাদিসের আলোকে মিলাদ-কিয়ামের অকাট্য দলিল(মুস্তফা হামিদি,ছারছীনা) http://www.mediafire.com/file/ntw372p7138k142/ ৩.বসন্তের প্রভাত (আমিরে আহলেসুন্নাত, ইলিয়াস আত্তার কাদেরি,মাকতাবাতুল মদীনা) Download ৪.সিরাজুম মুনিরা(আমিমুল ইহসান রাহ:) download ৫.মৌলুদের মাহফিল ও কিয়াম(আলভী আল মালেকি আল মাক্কি রাহ:) download ৬.বারাহিনুল কাতিয়া ফি আমালিল মাওলিদ(কারামত আলী জৈনপুরী [রাহঃ] ৭. মু মুলাখখাছ-মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি download ৮.হাকীকতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী https://drive.google.com/fil

কাশফুল মাহযুব Kashful mahzub pdf

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কাশফুল মাহযুব হল হযরত দাতা বখশ হাজভেরী রহঃ এর অন্যতম গ্রন্থ । এর বাংলা হল মারেফতের মর্মকথা । বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে রশিদ বুক হাউজ । মূল বইটি ফারসি ভাষায় লিখিত । download this book in bangla : kashful mahzoob in bangla Kashful mahzoob is a book which is written by data ali hazveri rh.  Kashful Mahjoob  was originally written in Persian language by Hazrat Daata Ganj Bakhsh Ali Hajveri but then translated into many other languages as well including Urdu. Complete name of Hazrat Daata Sahab is ‘Abul Hassan Ali Ibn Usman al-Jullabi al-Hajveri al-Ghaznawi’. The book is a master piece in Islamic Sufi genre. Daata Ali Hajveri has written many books but this book has become a symbol in Sufi books. A famous saying about this book is ‘if you want to find a true murshad (spiritual guider) for you then read this book and you will definitely find one’. Download in english   https://ia601901.us.archive.org/21/items/KashfulMahjoobEn/KashfulMahjoob-en.pdf

Books of Shaykh abdul qadir gilani(rah;) বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রাহ:) এর কিতাব /বই ডাউনলোড করুন

Download in urdu               Books of Shaykh abdul qadir gilani (rah;)               শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) এর কিতাব                        বড়পীর শায়েখ আব্দুল কাদির জিলানী(রাহঃ) আল্লাহর বড় ওলি ছিলেন । তিনি                                         শরীয়ত,তরিকত,মারেফত,  তাসাউফ ও তাযকিয়া বিষয়ে অনেক কিতাব লিখেছেন । সেসব কিতাবসমূহের বাংলা ,ইংরেজী,আরবী ও উর্দু       অনুবাদের pdf নিচে দেয়া হল  ১.সিররুল আসরার Sirr ul asrar In Bangla      Download 1   in English  http://data.nur.nu/Kutub/English/Jilani_Sirr-al-Asrar-1---5.pdf in urdu    https://ia801309.us.archive.org/27/items/sirr-ul-asrar/sirr-ul-asrar.pdf ২.গুনিয়াতুত তালেবীন             download in bangla         in english                                 In urdu               In arabic                                                                           ৩.ফতহুল গায়ব FUTUH AL GHAIB Download in english                in urdu ৪.আল ফাতহুর রব্বানি Fathur rabbani