Skip to main content

যেসব দেশগুলোতে খ্রিস্টানদের বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন নিষিদ্ধ ও নিরুৎসাহিত করা হয় ও যেসব দেশে এগুলো পালিত হয়না ও এগুলোর সরকারি ছুটি নাই।

 যেসব দেশগুলোতে খ্রিস্টানদের বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন নিষিদ্ধ ও নিরুৎসাহিত করা হয় ও যেসব দেশে এগুলো পালিত হয়না ও এগুলোর সরকারি ছুটি নাই। 


২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা সারা বিশ্বে ক্রিসমাস বা বড়দিন পালন করে যাকে তারা যীশু খ্রিস্টের জন্মদিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এর পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর ও ০১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ যাকে তারা খ্রিস্টীয় নববর্ষ অভিহিত করে সেটা তারা পালন করে। খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এই দিবস উৎসবে শামিল হয়,অনেক মুসলিমরাও এগুলো পালন করে। তবে ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে এই ক্রিসমাস বা বড়দিন পালন করা কে পাপ ও নাজায়েজ তথা নিষিদ্ধ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবার প্রচলিত থার্টি-ফাস্ট নাইটকেও ইসলামে নিরুৎসাহিত করা হয়। 


বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশগুলোতে বড়দিনের সরকারি ছুটি থাকে। তবে বিশ্বের অনেক দেশেই এই ২৪-২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস বা বড়দিন পালন করা নিষিদ্ধ অথবা এর কোনো সরকারি ছুটি নাই। এমনকি এসব দেশে থার্টি-ফাস্ট নাইট তথা ইংরেজি বছরের শেষ দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনের অধিকাংশ আনুষ্ঠানিকতা পালনকে নিরুৎসাহিত করা হয়। হয়তো অনেকেই এটা জানেন না। সেসব দেশের মধ্যে কয়েকটির নাম এখানে উল্লেখ করা হলো। 

যেসব দেশে ক্রিসমাস / বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন করা হয় না বরং এগুলো নিরুৎসাহিত করা হয়,ও অনেক দেশে এগুলো পালন উদযাপন নিষিদ্ধ 

১.আফগানিস্তান : সর্বপ্রথম যে দেশের কথা বলা যায় এশিয়ার হৃদয় আফগানিস্তানের কথা। আফগানিস্তানে ১৯৯০ এর দশকে তালিবান তথা ইমা*রা*তে ইসলামীয়া ১৯৯৪-১৯৯৬ এর দিকে ক্ষমতায় আসার পরে বড়দিন পালনের বিরুদ্ধে নিষেধের দেয়। তাছাড়াও আফগানিস্তানের ৯৯.৭% মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী তথা মুসলিম (৯০% সুন্নি, ৯.৭% শিয়া) তাই সেখানে এই ক্রিসমাস বড়দিন একটা অপরিচিত দিবস। তবে ২০০১-২০২০ সালে আফগানিস্তানে ন্যাটো ও  মার্কিন সেনাঘাটি যখন অবস্থান করছিল তখন সেখানে বসবাসরত ন্যাটো সৈন্যরা বড়দিন পালন করতো। ২০২১ সালে ১৫ ই আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পরে এই ক্রিসমাস বড়দিন এর কোনো অফিসিয়াল স্বীকৃতি নাই৷ আফগানিস্তানে ২১ মার্চ তাদের নওরোজ নববর্ষ পালিত হয় যেকারণে সেখানে থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন নিরুৎসাহিত করা হয়।মূলত ঐতিহ্যগতভাবে সেদেশে বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন করা হয় না। 


২. আলজেরিয়া : আলজেরিয়াতে ৯৯% মানুষ মুসলিম ও  ০.৪% খ্রিস্টান সহ অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। তাই সেখানে ২৫ ডিসেম্বর ও ৩১ ডিসেম্বরকে স্বাভাবিক দিন মনে করা হয়। 


৩. ভূটান : দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি ছোট দেশ ভূটান। সেদেশের ৮৪ % বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী,১১% হিন্দু ধর্মাবলম্বী, ০.১ % মুসলিম বা ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং ১.১% খ্রিস্টান সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। বৌদ্ধ প্রভাবিত হওয়ায় সেখানে ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টানদের বড়দিন ও ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফাস্ট নাইট কে নিরুৎসাহিত করা হয়। 


৪. ব্রুনেই : দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম মুসলিম ব্রুনেইয়ে ২০১৫-১৬ সাল থেকে মুসলিমদের জন্য খ্রিস্টানদের বড়দিন পালন ধর্মীয় ও সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। সেদেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল এই ভয়ে যে এটির "অতিরিক্ত এবং প্রকাশ্যে" উদযাপন করা তার দেশের মুসলিম জনসংখ্যাকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি সেখানে প্রকাশ্যে থার্টি-ফাস্ট নাইট পালনে নিষেধাজ্ঞা আছে। বর্তমানে ব্রুনেইয়ে মুসলিম শরীয়াহ আইন এর অনুসরণ করে সেদেশের সরকার। ব্রুনেইয়ের ৮১% মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ  মুসলিম ও ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং বাকি ১৭ % খ্রিস্টান ও বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। 


৫.কমোরোস : আফ্রিকার অন্যতম মুসলিম দেশ কমোরোসে ৯৮% মুসলিম ও ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং ২% খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। সেদেশে খ্রিস্টানদের বড়দিনের কোনো সরকারি ছুটি নাই। সেখানে হিজরী বা ইসলামী নতুন বছরের প্রথম দিন সরকারি ছুটি হওয়ায় সেখানে তেমন কেউ থার্টিফাস্ট নাইট পালন করে না। 


৬. লিবিয়া : লিবিয়ায় খ্রিস্টানদের বড়দিনের আগের দিন ২৪ ডিসেম্বর লিবিয়ার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। তাছাড়াও লিবিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম ও ইসলাম ধর্মের অনুসারী। লিবিয়ায় ৯৬% মুসলিম ও ২.৭% খ্রিস্টান ও ০.৩% বৌদ্ধ  ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। এসব কারণে লিবিয়ায় বড়দিনের কোনো সরকারি ছুটি নাই এবং ২৫ ডিসেম্বর কে স্বাভাবিক দিন মনে করা হয়। সেখানেও হিজরী বা ইসলামী নতুন বছরের প্রথম দিন সরকারি ছুটি হওয়ায় সেখানে তেমন কেউ থার্টিফাস্ট নাইট পালন করে না। ঐতিহ্যগতভাবে সেদেশে বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন করা হয় না। 


৭. চায়না/চীন : শুধুমাত্র হংকং ও ম্যাকাও ব্যতীত  চীনে  বর্তমানে কমিউনিস্ট শাসন বিদ্যমান থাকায় সেখানে অন্যান্য ধর্মীয় দিবসের মতো  বড়দিন পালনে আপত্তি করা হয়। চীনে ক্রিসমাস বা বড়দিনে কোনো সরকারি ছুটি নাই। ঐতিহ্যগতভাবে সেদেশে বড়দিন পালন করা হয় না। প্রকাশ্যে ক্রিসমাস ক্যারল (একধরনের গান গীতিকবিতা) গাইলেও সেদেশে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। পশ্চিমা প্রভাব এড়াতে সেদেশে গতবছর থেকে বড়দিন উদযাপন বাতিল ঘোষণা করে। 


৮. সৌদি আরব : বিশ্বের অন্যতম মুসলিম দেশ সৌদি আরবে ঐতিহ্যগতভাবেই খ্রিস্টানদের বড়দিন ক্রিসমাস ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালন, এসব দিবসের শুভেচ্ছা জানানো কে নিরুৎসাহিত করা হত কয়েকদশক ধরে। তবে ২০১৭ সালে সেদেশের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় আসার পরে রাজধানী রিয়াদে ডিসেম্বরে ক্রিসমাস ট্রি বা এজাতীয় জিনিস,চকচকে অলঙ্কার এসব বিক্রয় ও সেদেশে বসবাসরত বিদেশী ও খ্রিস্টানদের সীমিত আকারে বড়দিন পালনের  কথাও অনেক গণমাধ্যমে শোনা গিয়েছিল। 


৯.সোমালিয়া : আফ্রিকার অন্যতম মুসলিম দেশ সোমালিয়ায় ২০০৯ সাল থেকে বড়দিন ক্রিসমাস পালনে নিষেধাজ্ঞা আছে। এই ধরনের খ্রিস্টান উৎসব দেশটির মুসলিম বিশ্বাসকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করে। 


১০.তাজিকিস্তান : তাজিকিস্তানে ৭ বছর আগ ক্রিসমাস ট্রি এবং স্কুলে উপহার দেওয়া নিষিদ্ধ করেছিল।  "আতশবাজি ব্যবহার, উত্সব খাবার, উপহার দেওয়া এবং অর্থ সংগ্রহ" শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি ডিক্রির মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে সেদেশে ক্রিসমাস/বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইট পালনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। 


১১.তিউনিসিয়া : মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার অন্যতম মুসলিম দেশ তিউনিসিয়ায় ঐতিহ্যগতভাবে  ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টানদের বড়দিন ও থার্টি-ফাস্ট নাইটের প্রকাশ্য  উদযাপন নেই এবং এটি দেশের জন্য একটি নিয়মিত স্বাভাবিক  কাজের দিন। 


১২. উজবেকিস্তান: উজবেকিস্তানের ৯৪% মানুষ মুসলিম ও ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং বাকিরা খ্রিস্টান ও বাহাই সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। দেশের প্রায় 10% ইস্টার্ন অর্থোডক্স খ্রিস্টান হওয়া সত্ত্বেও এখানে বড়দিন উদযাপন করা হয় না।  পরিবর্তে, উজবেকিস্তানের নববর্ষ উদযাপনগুলি খ্রিস্টানদের ক্রিসমাস উৎসবের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। 


১৩. ইয়েমেন :




Comments

Popular posts from this blog

মীলাদুন্নাবী (সা:) ও মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে -বিপক্ষে দলিল ভিত্তিক বইসমূহ Books about mawlid and milaad

 মিলাদের বিপক্ষে ও পক্ষে দলিল ভিত্তিক বই সমূহ Books about mawlid and meelad আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভাল আছ।আমরা অনেকে একটা বিষয়ে অনেক কিছু বলি। এটা নিয়ে অনেক কিতাব,ওয়াজ ও বাহাস হয়েছে। সে বিষয়টি হল মিলাদুন্নবী ও মিলাদ-কেয়াম।আমরা অনেকে এটার পক্ষে, অনেকে এটার বিপক্ষে। সেই বিষয়ে  আমরা অনেকে বলি এটি বিদাত।এই বিষয়ে কিছু কিতাবের pdf দেয়া হল মিলাদের পক্ষে : ১.মিলাদুন্নবী ও মিলাদ মাহফিল (নাইমুল ইহসান বারাকাতি,Barakati publication) Download ২.কুরআন হাদিসের আলোকে মিলাদ-কিয়ামের অকাট্য দলিল(মুস্তফা হামিদি,ছারছীনা) http://www.mediafire.com/file/ntw372p7138k142/ ৩.বসন্তের প্রভাত (আমিরে আহলেসুন্নাত, ইলিয়াস আত্তার কাদেরি,মাকতাবাতুল মদীনা) Download ৪.সিরাজুম মুনিরা(আমিমুল ইহসান রাহ:) download ৫.মৌলুদের মাহফিল ও কিয়াম(আলভী আল মালেকি আল মাক্কি রাহ:) download ৬.বারাহিনুল কাতিয়া ফি আমালিল মাওলিদ(কারামত আলী জৈনপুরী [রাহঃ] ৭. মু মুলাখখাছ-মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি download ৮.হাকীকতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী https://drive.google.com/fil

কাশফুল মাহযুব Kashful mahzub pdf

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কাশফুল মাহযুব হল হযরত দাতা বখশ হাজভেরী রহঃ এর অন্যতম গ্রন্থ । এর বাংলা হল মারেফতের মর্মকথা । বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে রশিদ বুক হাউজ । মূল বইটি ফারসি ভাষায় লিখিত । download this book in bangla : kashful mahzoob in bangla Kashful mahzoob is a book which is written by data ali hazveri rh.  Kashful Mahjoob  was originally written in Persian language by Hazrat Daata Ganj Bakhsh Ali Hajveri but then translated into many other languages as well including Urdu. Complete name of Hazrat Daata Sahab is ‘Abul Hassan Ali Ibn Usman al-Jullabi al-Hajveri al-Ghaznawi’. The book is a master piece in Islamic Sufi genre. Daata Ali Hajveri has written many books but this book has become a symbol in Sufi books. A famous saying about this book is ‘if you want to find a true murshad (spiritual guider) for you then read this book and you will definitely find one’. Download in english   https://ia601901.us.archive.org/21/items/KashfulMahjoobEn/KashfulMahjoob-en.pdf

Books of Shaykh abdul qadir gilani(rah;) বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রাহ:) এর কিতাব /বই ডাউনলোড করুন

Download in urdu               Books of Shaykh abdul qadir gilani (rah;)               শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) এর কিতাব                        বড়পীর শায়েখ আব্দুল কাদির জিলানী(রাহঃ) আল্লাহর বড় ওলি ছিলেন । তিনি                                         শরীয়ত,তরিকত,মারেফত,  তাসাউফ ও তাযকিয়া বিষয়ে অনেক কিতাব লিখেছেন । সেসব কিতাবসমূহের বাংলা ,ইংরেজী,আরবী ও উর্দু       অনুবাদের pdf নিচে দেয়া হল  ১.সিররুল আসরার Sirr ul asrar In Bangla      Download 1   in English  http://data.nur.nu/Kutub/English/Jilani_Sirr-al-Asrar-1---5.pdf in urdu    https://ia801309.us.archive.org/27/items/sirr-ul-asrar/sirr-ul-asrar.pdf ২.গুনিয়াতুত তালেবীন             download in bangla         in english                                 In urdu               In arabic                                                                           ৩.ফতহুল গায়ব FUTUH AL GHAIB Download in english                in urdu ৪.আল ফাতহুর রব্বানি Fathur rabbani